সবং

পাশের গ্রামে আগে কাজ, রাতভর অবস্থান

সেতুর দাবিতে সেচ দফতরের কার্যালয়ে অবস্থান চলল বৃহস্পতিবারও। বুধবার বিকেল থেকে সবংয়ে সেচ দফতরের মহকুমা কার্যালয়ে অবস্থানে বসেন নারায়ণবাড় পঞ্চায়েতের অমরবাড় গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। অবস্থানের জেরে রাতেও অফিসেই ছিলেন সেচ দফতরের আধিকারিক-কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৬ ০১:১৬
Share:

ঘেরাও সেচ দফতর।—নিজস্ব চিত্র।

সেতুর দাবিতে সেচ দফতরের কার্যালয়ে অবস্থান চলল বৃহস্পতিবারও। বুধবার বিকেল থেকে সবংয়ে সেচ দফতরের মহকুমা কার্যালয়ে অবস্থানে বসেন নারায়ণবাড় পঞ্চায়েতের অমরবাড় গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। অবস্থানের জেরে রাতেও অফিসেই ছিলেন সেচ দফতরের আধিকারিক-কর্মীরা।

Advertisement

বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীর দাবি, আমরাখালি খালের উপর অমরবাড় গ্রামে সেতু তৈরির কাজের অর্ডার হয়। সেতুর ‘ওয়ার্ক অর্ডার’-এও অমরবাড় গ্রামের নামই রয়েছে। যদিও এখন সেচ দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, ‘ওয়ার্ক অর্ডার’-এ ভুলবশত অমরবাড় গ্রামের নাম লেখা হয়েছে। আমরাখালি খালের উপরই নতুন সেতুটি হবে। যদিও অমরবাড়ের পাশের গ্রাম দক্ষিণ বাঁশবনিতে সেতুটি তৈরি করা হবে। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে সেচ দফতর। ভুল স্বীকার করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কথাও বলেন সেচ দফতরের আধিকারিকরা। যদিও নিজেদের গ্রামে সেতুর দাবিতে অনড় অমরবাড় গ্রামের বাসিন্দারা। এই ঘটনার পিছনে সেচ দফতরের আধিকারিকদের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করছেন তাঁরা।

অবস্থানের জেরে বুধবার সারা রাত অফিসেই ছিলেন সেচ দফতরের এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, চার জন মহকুমা আধিকারিক, তিন জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। পরিস্থিতি সামলাতে রাতেই সেচ দফতরের অফিসে যান সবংয়ের বিডিও। যদিও তারপরেও অবস্থান তোলেনি গ্রামবাসীরা।

Advertisement

ওই সেতুর কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেচ দফতরের মহকুমা আধিকারিক শ্যামল ঘোষ বলেন, “একবার ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ হয়ে গেলে তা বদলানো যায় না। আমরা তো স্বীকার করছি ভুল করে ওয়ার্ক অর্ডারে মৌজার নাম অমরবাড় ছাপা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাকি বিষয়গুলি তো দক্ষিণ বাঁশবনির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এখন গ্রামবাসীরা ঘেরাও না তুললে আমাদের বন্দি থাকতেই হবে। কিন্তু এ ভাবে কি অফিসে বন্দি থাকা যায়!”

বৃহস্পতিবার অবস্থানকারী নান্টু নায়েক, রাজেশকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপদ মাইতিরা বলছেন, “আমাদের গ্রামের জন্য ওই সেতু মঞ্জুর হয়েছিল। কিন্তু দফতরের আধিকারিকেরা ষড়যন্ত্র করে এখন দক্ষিণ বাঁশবনিতে সেতুটি গড়তে চাইছেন।’’ তাঁরা আরও বলছেন, ‘‘সেচ দফতরের আধিকারিক, বিডিও, পুলিশ কেউ সদুত্তর দিতে পারছে না। আমাদের গ্রামে সেতু না হলে আমরাও অবস্থান তুলব না।”

সমস্যা কোথায়? কপালেশ্বরী নদী বরাবর বয়ে গিয়েছে আমরাখালি খাল। খালটি কেলেঘাই নদীতে মিশেছে। খালের ওপর রয়েছে ৫টি কাঠের সেতু। সেতু দিয়ে যাতায়াতে অসুবিধা হয়। তাই এর মধ্যে কয়েকটি সেতু কংক্রিটের করার সিদ্ধান্ত হয়। ইতিমধ্যেই খালের উপর একটি সেতু কংক্রিটের করার পরিকল্পনা হয়। সম্প্রতি সেতুর কাজের দরপত্র ডেকে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ হয়। সেই ওয়ার্ক অর্ডারে অমরবাড় মৌজা রয়েছে।

সেচ দফতরের দাবি, ভুল করে ওয়ার্ক অর্ডারে অমরবাড়ের নাম রয়ে গিয়েছে। কারণ প্রকল্প অনুযায়ী দক্ষিণ বাঁশবনি গ্রামেই সেতু তৈরি হবে। সেই মতো কাজের নকশাও করা হয়েছে। দক্ষিণ বাঁশবনি সেতু দিয়েই সহজে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়া যায়।

প্রকল্পের এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শুভাশিস পাত্র বলেন, “বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীরা চাইছে এখনই অমরবাড় গ্রামে সেতু গড়তে হবে। সেটা সম্ভব নয়। কারণ দক্ষিণ বাঁশবনি গ্রামে সেতু তৈরির জন্যই নকশা হয়েছে। বাকি ৪টি সেতুও গড়া হবে। তা সত্ত্বেও ওঁরা ঘেরাও করলে কী করব। আধিকারিকদের জানিয়েছি।” খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “সেতুর ওয়ার্ক অর্ডারে মৌজার নাম ভুল ছাপা হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে ঘেরাও চলতে পারে না। এ ভাবে চললে জোর করে ঘেরাও তুলে দিতে বাধ্য হব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement