—ফাইল চিত্র
পাখির চোখ আগামী বিধানসভা ভোট। তার আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। পিপিপি মডেলে রামনগর-১ ব্লকের তাজপুরে গড়ে উঠবে এই বন্দর। রাজ্য সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে পরিবেশবান্ধব সমুদ্র বন্দর গড়ে তুলতে আগ্রহী বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে দরখাস্ত কিংবা ইওআই(এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট) চাইল রাজ্য সরকারের শিল্প- বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ দফতরের অধীন মেরিটাইম বোর্ড। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইচ্ছুক আবেদনকারীরা দরখাস্ত জমা দিতে পারবেন। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের তরফে পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে দিঘায় বাণিজ্য সম্মেলনে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শঙ্করপুরে বন্দরের কাজের সাইট অফিসের সূচনাও হয়ে গিয়েছে। গোড়ায় কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই বন্দর গড়ে তুলতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের গড়িমসিতে পরে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে বন্দর নির্মাণের কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। কারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে তাজপুরের গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তুলতে চায়, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা চলছিল। এ বার রাজ্যের শিল্প-উন্নয়ন নিগমের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, বন্দর নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিষেবা প্রদান এবং ও রক্ষণাবেক্ষণে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বেসরকারি সংস্থা আবেদন করতে পারবে। তবে তার জন্য ইচ্ছুক বেসরকারি সংস্থাগুলির মূলধন ন্যূনতম ১৮০০ কোটি টাকা থাকতে হবে। প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন বেসরকারি সংস্থার সন্ধান পেলে বন্দর তৈরির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। কোন সংস্থাকে বন্দর তৈরি করতে দেওয়া হবে তা আগে স্থির করবেন রাজ্য শিল্পউন্নয়ন নিগম। তারপরেই বন্দরের ফিজিবিলিটি রিপোট ও প্রকল্পের খসড়া ওই সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।
যদিও তাজপুরে বন্দর তৈরির ব্যাপারে সরকারি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এককভাবে কোনওমতেই তাজপুরে রাজ্য সরকারের পক্ষে বন্দর গড়া সম্ভব নয়। বিধানসভা ভোটের আগে মানুষকে বোকা বানাতেই রাজ্য সরকারের এই নয়া কৌশল।’’ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক এবং দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অখিল গিরির পাল্টা দাবি, ‘‘বন্দর তৈরির কাজ শুরু করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এর জন্য রাজ্য ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। ইতিমধ্যে বেসরকারি উপযুক্ত সংস্থার সন্ধানে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাজপুরে বন্দর তৈরি হলে পণ্য আমদানি-রফতানি অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। জেলার অর্থনীতি আমূল বদলে যাবে।’’