প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা পিনকনের বিরুদ্ধে হওয়া প্রতারণার মামলায় আমনতকারীদের টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয় আদালত)। রাজ্য সরকারের চালু করা চিটফান্ড প্রতারণা নিয়ন্ত্রণের নতুন আইনে ওই লগ্নিসংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর নির্দেশ দেন বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়। ওই নির্দেশ অনুযায়ী আদালতের নজরদারিতেই আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর পুরো প্রক্রিয়া চালানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বিচারকের নির্দেশ মেনেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন থানা এলাকা মিলিয়ে পিনকন সংস্থার প্রায় ৩৯ হাজার আমানতকারীকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করতে শুক্রবার থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে।
ধাপে ধাপে বিভিন্ন থানা এলাকার আমানতকারীদের আদালতের কাছ থেকে ওই ফর্ম নেওয়া এবং তা পূরণ করে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার তমলুক, মহিষাদল, ভগবানপুর, দিঘা, মন্দারমণি থানা এলাকার আমানতকারীদের ফর্ম দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওই সব এলাকার কয়েক হাজার আমনাতকারী তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের (তৃতীয় আদালত) অফিসের কাছে জড়ো হন। পুরো প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে করার জন্য আদালত প্রাঙ্গণে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল । নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে আদালত থেকে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জন আমানতকারীকে ফর্ম দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পিনকন সংস্থায় টাকা জমা দেওয়ার পরে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না বলে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে খেজুরি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আমানতকারীর একাংশ। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে রাজ্য সরকারের ডিরেক্টর অফ ইকোনোমিক অফেন্স (ডিইও)। তদন্ত চালিয়ে একে একে ওই সংস্থার কর্ণধার মনোরঞ্জন রায়-সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয় আাদালত) তথা অর্থনৈতিক অপরাধের বিশেষ আদালতের এজলাসে ওই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় ডিইও। মামলার বিচারপর্বের শুনানি চলছে। মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌমেন দত্ত বলেন, ‘‘পিনকনের আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের নজরদারিতে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এর জন্য আদালতের নির্দেশ মেনে বিভিন্ন থানার আমানতকারীদের নির্দিষ্ট ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। আগামী ২০ ফ্রেবুয়ারি পর্যন্ত ধাপে ধাপে বিভিন্ন থানা এলাকার আমানতকারীদের ফর্ম দেওয়া ও জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে।’’