Salary issues

দু’মাস বেতন অমিল, সমস্যায় পাঁচ শিক্ষক

সূত্রের খবর, তিনি ‘ম্যানুয়াল’ বিলে স্বাক্ষর করতে রাজি না হওয়ায় ফেব্রুয়ারি ও মার্চের বেতন পাননি ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এপ্রিল মাসেও বেতন মিলবে কি-না তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৩৪
Share:

দুই মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকেরা। প্রতীকী চিত্র।

দু’মাস বেতন পাচ্ছেন না ঝাড়গ্রাম জেলার পাঁচজন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। কয়েকবছর আগেই প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু এখনও ওই শিক্ষক-শিক্ষিকার বেতন হয় পুরনো পদ্ধতিতে (ম্যানুয়াল)। দু’মাস বেতন না পেয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা।

Advertisement

সূত্রের খবর, বিভাগীয় দফতরের গাফিলতিতেই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়া হয় সাবেক পদ্ধতিতে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক। সূত্রের খবর, তিনি ‘ম্যানুয়াল’ বিলে স্বাক্ষর করতে রাজি না হওয়ায় ফেব্রুয়ারি ও মার্চের বেতন পাননি ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এপ্রিল মাসেও বেতন মিলবে কি-না তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা।

কয়েক বছর আগে আইওএসএমএস পোর্টাল চালু হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষকেরা এখন মাসের পয়লা তারিখে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অনলাইনে বেতন পেয়ে যান। সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম জেলার তপসিয়া চক্রের ভাটপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপীবল্লভপুর পশ্চিম চক্রের তল ঘোড়াপিঞ্ছা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেলিয়াবেড়া চক্রের বড়পারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষক-শিক্ষিকার ‘টিচার্স আইডি’ তৈরি না হওয়ার ফলে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা হলে এতদিন কী ভাবে বেতন পাচ্ছিলেন তাঁরা? জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের পর জেলায় যে নতুন প্রাথমিক স্কুলগুলি চালু হয়েছে, সেগুলির ‘ডাইস কোড’ সময় মতো তৈরি হয়নি। পরে অবশ্য তা তৈরি হয়। ওই স্কুলগুলির ‘টিচার্স আইডি’ তৈরি না হওয়ায় সাবেক পদ্ধতিতে একাংশ শিক্ষক-শিক্ষাকাদের এতদিন বেতন দেওয়া হচ্ছিল। সমস্যার গভীরে রয়েছে আরও একটি বড় সমস্যা।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (ডিপিএসসি) দফতর রয়েছে। রয়েছেন ডিপিএসসি-র ঝাড়গ্রাম জেলার চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা। ২০১৭ সালে ঝাড়গ্রাম পৃথক জেলা হয়েছে। অথচ এখনও ঝাড়গ্রাম জেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন, পেনশন, ভবিষ্যনিধির মত যাবতীয় বিষয়গুলি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কার্যালয় থেকেই হয়। আইওএসএমএস পোর্টালে নাম ওঠেনি এমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনের জন্য সাবেক পদ্ধতিতে বিল তৈরি করে সংশ্লিষ্ট অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে পাঠানো হয়। সংসদের চেয়ারম্যান বিলে স্বাক্ষর করার পর সেই বিল ট্রেজারিতে যায়। ট্রেজারি থেকে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকার অ্যাকাউন্টে বেতনের টাকা পাঠানো হয়।

তল ঘোড়াপিঞ্ছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ তাপসী সিং, ভাটপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সন্দীপ বেরা, বড়পারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ স্বপন পাতর জানাচ্ছেন, সাবেক পদ্ধতির পরিবর্তে তাঁদের আইওএসএমএস পদ্ধতিতে অন্য শিক্ষকদের মত সরাসরি অনলাইনে বেতন দেওয়ার জন্য বহুবার ডিপিএসসিতে তাঁরা আবেদন করেছেন। বাংলার শিক্ষা পোর্টালের গ্রিভান্স সেল-এও তাঁরা এমপ্লয়ি আইডি তৈরির জন্য দরবার করেছেন। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, জানুয়ারি মাসের বেতন তাঁরা পেয়েছেন ১৩ ফেব্রুয়ারি। এরপর ফেব্রুয়ারির বেতন মার্চে ঢোকেনি। মার্চের বেতনও এপ্রিলে ঢোকেনি। এপ্রিলের বেতন মে মাসে ঢুকবে কি-না সন্দেহ। জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক সংসদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে এখন রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক। তিনি শিক্ষকদের বেতনের ম্যানুয়াল বিলে সই করতে রাজি হননি। এই কারণেই বেতন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (বিপিটিএ) ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক সমীর বেরা বলেন, ‘‘যাঁদের গাফিলতিতে এখনও অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়নি, তাঁদের শাস্তি না দিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন বন্ধ করে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে বেতন দেওয়া না হলে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অবস্থান করা হবে।’’

ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা সমস্যার কথা স্বীকার করে বলছেন, ‘‘মে মাস থেকে আমাদের জেলা থেকেই বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম আইওএসএমএস পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত করে বেতন দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement