—ফাইল চিত্র।
লকডাউনের শুরুতে বন্ধ হয়েছিল মন্দিরের মতো অন্য ধর্মীয় স্থানের দরজা। রাশ পড়ে নিত্য পুজোর্চনায়। বর্তমানে লকডাউন শিথিল হলেও করোনা সংক্রমণের ভয়ে কোথাও কোথাও পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন সমাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ওই পরিস্থিতি রুজিতে টান পড়েছে পুরোহিতকুলের।
বড় কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মফস্সলে গৃহস্থের বাড়িতে নিত্য পুজোয় পুরোহিতদের অবাধ যাতায়াত ছিল এত দিন। কিন্তু বর্তমানে জেলার পুরোহিতদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনার কারণে অনেকেই ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। আর বড়সড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান তো কার্যত হচ্ছেই না। পুজোর মরসুমে অনকে দুর্গাপুজো হবে কি না, সে নিয়েও ধন্দ রয়েছে। পুজোর সংখ্যা কমে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন পুরোহিতেরা।
পটাশপুরের পুরোহিতদের একাংশ জানাচ্ছেন, সামনে দুর্গা পুজো। অন্য বছর এই সময়ে মঃফস্বল থেকে শহরের হাজার হাজার মণ্ডপে পুরোহিতদের পুজোর বায়না আসত। অনেক সময় তাঁদের এত মণ্ডপে ডাক আসত যে, পুরোহিতদের সাহায্য করতে বাড়ির ছোটরাও বড়দের সঙ্গে হাত মেলাতে কাজে যেত। রাজ্য ছাড়িয়ে ভিন্ রাজ্য দিল্লি, গুজরাত পর্যন্ত এগরা মহকুমা ব্রাহ্মণেরা পুজোয় পাড়ি দিতেন। আর সারা বছরের বাঁধা ধরা উপার্জন থেকে এই পুজোর মরসুমে মোটা টাকার উপার্জনের হত পুরোহিতদের।
সংক্রমণের গেরোয় প্রথম কয়েক মাস পুরোহিতদের রুজিরুটিতে পড়ে টান। এবার পুজোয় সামান্য কয়েক জনের বাইরে থেকে ডাক এলেও বাকি সবাই ঘরে থাকছেন। একাংশ পুরোহিত বিকল্প পথে উপার্জনও করছেন। কেউ কেউ ভূষিমাল দোকানও দিয়েছেন। জেলায় রয়েছে ব্রাহ্মণদের সংগঠন। তাতে পুরোহিতদের ভাতা-সহ নানা আর্থিক প্রতিশ্রুতি দেওয়ার হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, এখনও সংগঠনের তরফে বা সরকারি ভাবে ভাতা চালু করা হয়নি। এ ব্যাপারে পটাশপুর-১ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সভাপতি ঝাড়েশ্বর পণ্ডা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সরকার কোনও ভাতা দেয়নি। আমাদের পুজোয় অর্চনা প্রায় বন্ধ। কোথাও যাব ভেবে কুল পাচ্ছি না।’’ পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে ফোন করা হয় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষকে। তবে তিনি ফোন ধরেননি।