মেরামত করা হচ্ছে ব্যালট বাক্স। ফাইল চিত্র
পুরনো ব্যালট বাক্সগুলি রং করে ফেলতে হবে। তার আগে, ছোটখাটো মেরামত প্রয়োজন থাকলে সে কাজও সেরে ফেলতে হবে। জেলায় জেলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এমনই নির্দেশ পৌঁছেছে। নির্দেশের প্রেক্ষিতে জেলায় এ নিয়ে তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, পুরনো ব্যালট বাক্সগুলিতে ‘অলিভ গ্রিন’ অর্থাৎ, জলপাই সবুজ রং করতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘পুরনো ব্যালট বাক্স রং করা সংক্রান্ত কমিশনের এক নির্দেশিকা এসেছে। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী জেলায় যে পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’ জানা যাচ্ছে, জেলায় ইতিমধ্যে ব্যালট বাক্সের ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ হয়েছে। বাক্সগুলি ব্যবহারযোগ্য রয়েছে কি না, মূলত সেটাই খতিয়ে দেখা হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ, ত্রুটি থাকলে মেরামত করে ফেলতে হবে। মেরামতের কাজ হবে সংশ্লিষ্ট ব্লকেই।
জেলা প্রশাসনের ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘কিছু ব্যালট বাক্সের ছোটখাটো মেরামত দরকার। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ কেমন মেরামত? তিনি বলেন, ‘‘কিছু ব্যালট বাক্সের ওয়েলিং, গ্রেসিং ইত্যাদি প্রয়োজন।’’ ইতিমধ্যে জেলা থেকে কমিশনে এক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, জেলায় কতগুলি ব্যালট বাক্স রয়েছে। তারমধ্যে কতগুলি ব্যবহারযোগ, কতগুলি একেবারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইত্যাদি।
কমিশন সূত্রে খবর, এ বারও ব্যালট বাক্সে যথারীতি ‘ইউনিক আইডেন্টিটি নম্বর’ থাকবে। সঙ্গে থাকতে পারে কিউআর কোডও (কুইক রেসপন্স কোড)। ব্লকে ব্লকে থাকা ব্যালট বাক্সগুলি জেলা সদরে এনে কিউআর কোড লাগানো হতে পারে। এ জন্য জেলা সদরে কোনও ঘেরা স্টেডিয়াম কিংবা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মতো জায়গা দেখে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত ‘মাইক্রো প্ল্যান’ তৈরি করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জেলাগুলিকে। যাতে পরবর্তী সময়ে নির্দেশ এলে দ্রুত পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মনে করাচ্ছেন, ‘‘সাধারণ বার কোডের তুলনায় কিউআর কোডের দ্রুত পঠনক্ষমতা এবং বেশি তথ্য ধরে রাখতে পারার ক্ষমতা রয়েছে।’’ প্রাথমিকভাবে মেদিনীপুরে একটি ঘেরা স্টেডিয়াম দেখে রাখা হয়েছে। যেখানে ব্যালট বাক্সগুলি এনে কিউআর কোড লাগানো যেতে পারে।
নির্দিষ্ট সময়ে হলে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৩ সালের মে মাস বা তার আশেপাশে। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কিছু তৎপরতা দেখে পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসার জল্পনা জোরদার হচ্ছে নানা মহলে। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের আসন পুনর্বিন্যাস এবং আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা।
এ বার ব্যালট বাক্স নিয়েও তৎপরতা শুরু হল। জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে যেমন প্রায় ১৬,২০০টি ব্যালট বাক্স রয়েছে। এর মধ্যে বড় মাপের ব্যালট বাক্স রয়েছে প্রায় ৪,৫৫০টি। ছোট ব্যালট বাক্স প্রায় ৬,৯৫০টি। এবং ইম্প্রোভাইসড ব্যালট বাক্স রয়েছে প্রায় ৪,৭০০টি।
পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে নির্বাচন। বুথপিছু ৩টি করে ব্যালট বাক্স প্রয়োজন। পশ্চিম মেদিনীপুরে বুথ রয়েছে ৪,৩১০টি। সেই সূত্রে এ জেলায় ব্যালট বাক্স প্রয়োজন অন্তত ১২,৯৩০টি। কমিশন জানিয়েছে, ছোটখাটো মেরামত করা এবং রং করার পিছনে ব্যালট বাক্সপিছু সর্বাধিক ১০০ টাকা খরচ করা যেতে পারে। এর বেশি নয়।