প্রতীকী ছবি।
উপভোক্তা তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে, অনুমোদন হয়ে গিয়েছে, এমনকি প্রথম কিস্তির টাকাও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে গিয়েছে। এমন সময় জানা গেল, সংশ্লিষ্ট উপভোক্তা সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাওয়ার অনুপযুক্ত, তিনি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। সে ক্ষেত্রে কী হবে? প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, অনুমোদন বাতিল করা হবে। সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার থেকে ওই টাকা ফেরতও নেওয়া হবে। শুরুতে টাকা ফেরত চেয়ে তাঁকে নোটিস ধরানো হবে। না ফেরালে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ব্লকে ব্লকে এই প্রশাসনিক বার্তা পৌঁছনোও হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘কেউ যদি অনুপযুক্ত হন, তাহলে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকে গেলেও তাঁকে সেই টাকা ফেরত দিতে হবে। এই ব্যবস্থা থাকছে। নির্দেশই রয়েছে, যাঁরা সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পাওয়ার উপযুক্ত নন, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, তাঁরা কোনওভাবেই বাড়ি পাবেন না।’’ এত যাচাই, দফায় দফায়, তাও কী ভাবে অনুপযুক্তের নাম তালিকায় থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে? শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার নাম রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়ে, অনুমোদন হয়ে গিয়ে, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা জমা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকছে? জেলা প্রশাসনের ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘একাধিকস্তরে যাচাই হয়েছে। ফলে, এমন সম্ভাবনা খুবই কম। তাও কোথাও সামান্য ভুল থেকে থাকলেও থাকতে পারে। ভুলটা নজরে এলে নিশ্চিতভাবে সংশোধন করা হবে। অনুপযুক্তের থেকে টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা থাকছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, আবাসের অগ্রাধিকার তালিকায় নাম রয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৬ হাজার জনের। এঁদেরই রেজিস্ট্রেশন করানোর প্রক্রিয়া চলছে এখন। পাশাপাশি, অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার ৯০০ জনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার ৭০০ জনের জিও ট্যাগিং সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় ১৩ হাজার ৪০০ জনের বাড়ির তৈরির অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়াও সারা হয়েছে।
সবদিক দেখে অগ্রাধিকার উপভোক্তার চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করছে জেলাস্তরের কমিটি। প্রথম পর্যায়ে যদি জেলার জন্য ১ লক্ষ ৬ হাজার বাড়ি বরাদ্দ হয়, তাহলে কোন ব্লক কত বাড়ি পেতে পারে? পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক রয়েছে। মেদিনীপুর (সদর) পেতে পারে প্রায় ৪,৭৫০টি বাড়ি, শালবনি প্রায় ৮,১৫০টি, কেশপুর প্রায় ৮,০১০টি, গড়বেতা- ১ প্রায় ৫,৩৪০টি, গড়বেতা- ২ প্রায় ৫,৫২০টি, গড়বেতা- ৩ প্রায় ৫,৫৭০টি। অন্যদিকে, সবং পেতে পারে প্রায় ৮,৯৯০টি বাড়ি, পিংলা প্রায় ৩,৭৩০টি, নারায়ণগড় প্রায় ৬,৪৪০টি, কেশিয়াড়ি প্রায় ৮,০৮০টি, ঘাটাল প্রায় ৪,৮৫০টি, চন্দ্রকোনা- ১ প্রায় ৩,২৫০টি, চন্দ্রকোনা- ২ প্রায় ৪,১০০টি, দাঁতন- ১ প্রায় ৩,৮২০টি, দাঁতন- ২ প্রায় ২,০৭০টি, দাসপুর- ১ প্রায় ৩,১৪০টি, দাসপুর- ২ প্রায় ১,৬৪০টি, ডেবরা প্রায় ৬,৬৭০টি, খড়্গপুর- ১ প্রায় ২,৪০০টি, খড়্গপুর- ২ প্রায় ৭,৬৬০টি, মোহনপুর প্রায় ১,৭০০টি বাড়ি পেতে পারে।
প্রশাসনের একটি অংশের অনুমান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দ (প্রথম কিস্তির) মিলতে পারে নতুন বছরের গোড়ায়।