নির্মাল্যের বিরুদ্ধে পোস্টার (বাঁদিকে)। সমর্থনে ফ্লেক্স (ডানদিকে) ।নিজস্ব চিত্র
আগে ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছিল। এ বার কাটমানির টাকা ফেরত চেয়ে পোস্টার পড়ল মেদিনীপুর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তীর নামে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওয়ার্ডের একাধিক পাড়ায় এই পোস্টার দেখা যায়। বেলা গড়াতে চোখে পড়ে পাল্টা ফ্লেক্সও। যেখানে দাবি করা হয়েছে, কেউ বা কারা নির্মাল্যর নামে কুৎসা করছে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা আবার দাবি করেছেন, ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর জিতেন্দ্রনাথ দাসের দুই অনুগামী সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরে ওই দু’জন তাঁকে সেই টাকা ফেরতও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ২ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক পাড়ায় পোস্টার দেখা যায়। উপরে লেখা, ‘কাটমানির টাকা ফেরত চাই।’ মাঝে লেখা, ‘ঘুষখোর কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তী কবে ফেরত দেবে। জবাব চাই জবাব দাও।’ আর নীচে লেখা, ‘২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকাবাসীবৃন্দ।’ বেলা গড়াতে আবার পাল্টা ফ্লেক্স চোখে পড়ে ওয়ার্ডের একাধিক পাড়ায়। উপরে লেখা, ‘যে বা যারা ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলরের নাম লিখে, ওনার প্রতি যে কুৎসা করেছে আমরা ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ নাগরিকবৃন্দ এর তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।’ নীচে লেখা, ‘২ নম্বর ওয়ার্ড অধিবাসীবৃন্দ।’ তৃণমূলের দাবি, বিজেপির লোকেরাই কাউন্সিলরের নামে কুৎসা করে পোস্টার দিয়েছেন। স্থানীয়দের অনুমান, পাল্টা ফ্লেক্স দিয়েছেন নির্মাল্যের অনুগামীরা।
ক’দিন আগেই নির্মাল্যর নামে কাটমানি ফেরত চেয়ে ফ্লেক্স পড়েছিল। নির্মাল্য দাবি করেন, ‘‘কখনও কারও কাছ থেকে এক টাকাও কাটমানি নিইনি।’ আপনার সমর্থনেও ফ্লেক্স কারা দিল? নির্মাল্য বলেন, ‘‘এলাকার মানুষই দিয়েছেন। মানুষ জানেন আমি সারা বছর পাশে থাকি।’’
আগেই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর রোকাইয়া খাতুনের বাড়ির সামনে কাটমানি ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। তারপর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী নির্দল কাউন্সিলর বিশ্বেশ্বর নায়েক আগাম ঘোষণা করেন, ‘‘কোনও উপভোক্তার কাছ থেকে এক টাকাও নিইনি।’’
৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর মৌ রায় আবার কাটমানি নেননি দাবি করে এই প্রসঙ্গে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছেন। এ দিন ফের কাটমানি পোস্টারে শোরগোল বাধল।
২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভারতী রাণার আবার দাবি, ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর জিতেন্দ্রনাথ দাসের দুই অনুগামী সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে তাঁর থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তাঁরা সম্প্রতি সেই টাকা ফেরত দিয়েছেন। জিতেন্দ্রনাথ অবশ্য বলেন, ‘‘কে টাকা দিয়েছিল, কে টাকা ফিরিয়েছে, কিছুই জানি না।’’ তৃণমূলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে।’’ বিজেপির জেলা সম্পাদক অরূপ দাসের খোঁচা, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরাতে বলেছেন। যারা কাটমানি দিয়েছেন, তারা তো ফেরত চাইবেনই। তৃণমূল কাউন্সিলরদের উচিত, কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়া।’’