হাসপাতালের ভিতরে ফলস সিলিং খুলে গিয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
খুলে পড়ছে ফলস সিলিং। অর্ধেক খুলে ঝুলছে স্মোক ডিটেক্টর। মেঝেতে টাইলস ভেঙে গিয়েছে। শৌচালয়ে ভাঙা দরজা। অব্যবস্থার মধ্যে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোগী পরিষেবার কাজ চলছে বলে অভিযোগ। একাধিক বার স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি পাঠিয়েও কাজ হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। এতে হাসপাতালের অব্যবস্থা এবং চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রোগীর পরিবার।
প্রায় এক দশকেরও বেশি আগে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোগী পরিষেবা চালু হয়েছে। শুরুতে ঝাঁচকচকে পরিকাঠামো যুক্ত ভবন যে কোনও নামী বেসরকারি হাসপাতালকে হার মানাতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগী পরিষেবা থেকে শুরু করে হাসপাতালের পরিকাঠামো—সব কিছুরই বেহাল দশা হয়েছে বলে অভিযোগ। মাঝে এক বার হাসপাতালে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়েছিল। তারপর আর কোনও সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়নি বলে দাবি।
হাসপাতালে ছ’তলা ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। কোথায় ফলস সিলিং খুলে পড়েছে। কোথাও ঝুলে রয়েছে স্মোক ডিটেক্টর যন্ত্র। অনেক আলো জ্বলে না। কোথাও ফসল সিলিং না থাকায় সেখানের আলো খুলে পড়ে রয়েছে। রোগী ও হাসপাতালে কর্মীদের ব্যবহৃার করা অধিকাংশ শৌচালয়গুলিরই দরজা ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। সেগুলি ব্যবহার করার উপযোগীও নেই। রোগীদের বসার লোহার বেঞ্চ ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চারিদিকে পড়ে থাকা নোংরা আবর্জনা এবং পানের ফেলা পিকে হাসপাতালের ভিতরেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয়েছে।
এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৩০০টির বেশি শয্যায় রোগী পরিষেবা দেওয়া হয়। রয়েছে আইসিসিইউ-র মতো জরুরি পরিষেবা। আগে এগরা মহকুমা-সহ পড়শি জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর থেকেও প্রচুর রোগী সরকারি এই হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য ভিড় করতেন। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালে পরিকাঠামো এবং চিকিৎসার পরিষেবার মান খারাপ হওয়ায় এখন রোগী অনেক কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বেশির ভাগ রোগীকে অন্যত্র রেফার করা হয়। মোহনপুরের এক রোগীর আত্মীয় অসীম দাস বলেন, ‘‘হাসপাতালে সিলিং খুলে গিয়েছে। মেঝেতে টাইলস ভাঙা। শৌচালয়গুলি ব্যবহারের উপযোগী নেই। গোটাটাই অব্যবস্থার মধ্যে চলছে।’’
উল্লেখ্য, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন ও মেরামতির জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর দরপত্র আহ্বান করে। সেই মতো ঠিকাদার সংস্থা এসে হাসপাতালের পরিকাঠামো মেরামতির কাজ করে। এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নয়ন ও মেরামতির জন্য একাধিক বার স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়েও সদুত্তর আসেনি। হাসপাতালের সুপার সমীর আচার্য বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর সমস্যা থাকায় রোগী পরিষেবায় জটিলতা দেখা গিয়েছে। মেরামতির জন্য স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’