দূষণের প্রতিবাদে কারখানায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
শহর জুড়ে বাড়ির ছাদে কালচে লাল ধুলোর আস্তরণ। জুতো ছাড়া চলাই দায়। বাড়ির বাইরের রং নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এক-দু’বছরেই। বাড়ছে শ্বাসকষ্টজনিত অসুখ। এ সবের পিছনে শহরের বাইরে চলা একটি মেটালিক্স কারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামোগত অভাবকে দুষছেন শহরবাসী।
শুক্রবার বিকেলে খড়্গপুরের ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে থাকা ওই মেটালিক্স কারখানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করলেন শহরবাসীর একাংশ। এ দিন শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, এই কারখানার পরিকাঠামোগত অব্যবস্থার জন্য গত কয়েক বছরে ধরেই শহরবাসীকে দূষণ সমস্যা ভোগ করতে হচ্ছে। ক্রমেই এই দূষণ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা দূষিত পদার্থের আস্তরণ জমে থাকছে বাড়ির বারান্দা ও ছাদে। দূষিত ধুলোর হাত থেকে বাঁচছে না গাছও। তাই অবিলম্বে ওই সংস্থাকে দূষণ রোধে সক্রিয় হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শহরবাসীরা।
ঝাড়গ্রামের পাটোয়ারি পরিবার পরিচালিত এই মেটালিক্স কারখানা বছর দশেক আগে সাহাচকের কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে পিগ্ আয়রনের প্রকল্প স্থাপন করে। বছর ছ’য়েক আগে এলাকারই মথুরাকিসমতের কাছে আরও একটি সম্প্রসারিত দ্বিতীয় প্রকল্প চালু করে ওই সংস্থা। সেটি মূলত স্পঞ্জ আয়রণ ও ১২ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্রকল্প। তবে বছর কয়েক ধরেই ওই মেটালিক্স কারখানা থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। মূলত শহরের উত্তরে থাকা ওই কারখানা এলাকা থেকে দক্ষিণে থাকা শহরের সুভাষপল্লি, খরিদা, বিধানপল্লি, কুমোরপাড়া, ভগবানপুর, সুষমাপল্লি, যুবসঙ্ঘ, ঢেকিয়া, বালাজি মন্দিরপল্লি এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। এ দিন কুমোরপাড়ার বাসিন্দা রাজা মল্লিক বলেন, “মুম্বই রোডের দক্ষিণ ঘেঁষা এলাকাগুলিতে এই মেটালিক্স কারখানা থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। দূষণ বন্ধের দাবি জানিয়েছি।”
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আগামীদিনে জেলাশাসক এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে এই অভিযোগ জানানো হবে। মেটালিক্স কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (প্রকল্প) পার্থসারথি বৈদ্য বলেন, “আসলে সিলিকন নয়, প্রকল্প এলাকায় পড়ে থাকা লৌহ আকরিক ও কাঠকয়লা বাতাসের সঙ্গে উড়ছে বলে মনে হচ্ছে। চিমনি থেকে দূষণ ছড়ানোর কথা নয়।’’ পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পরিকাঠামোগত অভাব রয়েছে। দ্রুত কোনও পরিবেশবিদ্কে দিয়ে পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলব।”