মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিয়ে রুখল প্রশাসন

নারী দিবসের দিনই এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিয়ে রুখল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। নন্দীগ্রামের ওই নাবালিকা চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নাবালিকার বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল আগামী ১৩ই মার্চ।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৭ ০১:২১
Share:

নারী দিবসের দিনই এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিয়ে রুখল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নন্দীগ্রামের ওই নাবালিকা চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নাবালিকার বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল আগামী ১৩ই মার্চ। পরিবারের ইচ্ছা ছিল, বিয়ে যখন হয়েই যাবে তখন আর পরীক্ষা দিয়ে কী লাভ! বিয়েতে প্রথম থেকে নিমরাজি ছিলওই নাবালিকা। ওই কিশোরী পরিবারের সকলের বিপক্ষে গিয়ে মাধ্যমিকে বসেছিল। মঙ্গলবার ছিল তার শারীর শিক্ষার পরীক্ষা।

কিন্তু এই পরীক্ষায় আর ওই কিশোরীকে বসতে দিতে চাইছিল না পরিবার। বিষয়টি ঠাহর করে বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই কিশোরী বান্ধবীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। কিন্তু ওই নাবালিকার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় ফোন।

Advertisement

সোমবার পরিবারের লোকেরা ওই নাবালিকাকে চার কিলোমিটার দূরে মামারবাড়ি পাঠিয়ে দেয়। শেষ মুহূর্তে অন্য এক বান্ধবীর ফোন থেকে খবরটা সে জানিেয় দেয় আর এক বান্ধবীকে। এই খবর বন্ধুদের মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে যায়। মঙ্গলবার, অর্থাৎ শারীর শিক্ষা পরীক্ষার দিন সকালে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌরভ প্রধান বিষয়টি জানান নন্দীগ্রাম-২ এর বিডিও মহম্মদ ইকবালকে।

নন্দীগ্রাম থানা ও বিডিও মহম্মদ ইকবাল প্রশাসনিক লোকদের মেয়েটির বাড়িতে পাঠান। সিভিক ভলান্টিয়ারের বাইকে চেপে মামারবাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে শারীরশিক্ষা পরীক্ষা দিতে যায়
ওই নাবালিকা। সুস্মিতার বন্ধুদের অভিযোগ, ‘‘পড়াশোনা করতে চাইলেই মেয়েটির উপর অত্যাচার করতেন বাড়ির লোকেরা।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌরভ প্রধান বলেন, ‘‘ও অনেক দিন ধরেই বলছে, বাড়ির লোকেরা পড়তে দেবে না। কিন্তু মাধ্যমিকও যে দিতে দেবেন না, আমরা ভাবতে পারিনি।’’

নাবালিকা বিয়ে রুখতে বছরভর প্রচার চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। আর রাজ্যে শিক্ষার হারে প্রথম এই পূর্বে মেদিনীপুর জেলা। অথচ সেই জেলাতেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে না দিয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনা ন্যক্কারজনক বলে মানছে শিক্ষামহলও।

ওই নাবালিকার বাবা পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, মেয়ে সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না। আর এ দিন পরীক্ষা দিয়ে খুশি নাবালিকাও। বলে, ‘‘আমি পড়তে চাই। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। বন্ধুরা ঠিক সময় খবর না দিলে পড়ার স্বপ্নই অধরা থেকে যেত।’’

হলদিয়ার মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘প্রশাসন ছাত্রীটির পাশে থাকবে। ছাত্রীটিকে পড়ার জন্য কী ভাবে আর্থিক সাহায্য করা যায় তা দেখতে নির্দেশ দিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement