জলের তলায় ঘাটাল থানা। শুক্রবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র।
বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও এখনও জলের তলায় দুই মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ। পরিস্থিতি এমনই যে, বুকসমান জলের তলায় চলে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানা। ডিভিসির ছাড়া জলে গোটা ঘাটাল মহকুমাতেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখনও জলের তলায় বহু বাড়ি। এই পরিস্থিতিতে থানাও ডুবে যাওয়ায় সেচ দফতরের অফিসে বসে কাজ চালাতে হচ্ছে পুলিশকে। কিন্তু থানার ভিতরে বহু জরুরি নথি থেকে যাওয়ায় সেগুলি হারানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, থানার ভিতরেও বুকসমান জল। থানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়ি, এমনকি বাজেয়াপ্ত করা গাড়িগুলিও কার্যত ভাসছে। অস্থায়ী বন্দোবস্ত হিসাবে থানার নিকটবর্তী সেচ দফতরের অফিসে বসেই জরুরি কাজ সামলাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অফিস ব্যবহার করতে চেয়ে গত সোমবারই সেচ দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়েছিল পুলিশ। অফিস ব্যবহারের অনুমতি মেলে বুধবার। অন্য দিকে, জলের তোড়ে ভেসেছে পুলিশ ব্যারাকও। এই পরিস্থিতিতে ঘাটাল থানার নিকটবর্তী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি হোটেল ভাড়া নিয়ে থাকছেন পুলিশকর্মীরা। থানার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মাঝেমধ্যে নৌকায় চেপে যাতায়াত করছেন পুলিশকর্মীরা।
থানার ভিতরেও ঢুকেছে জল। —নিজস্ব চিত্র।
ঠিকানা বদল করলেও থানায় থাকা বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। থানার মালখানায় বহু জিনিসপত্র ছিল। তা ছাড়া দ্রুত জল বাড়তে শুরু করায় গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলিও বার করা যায়নি। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সেগুলি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যাবে না বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে এই পরিস্থিতিতেও ত্রাণ বিলির কাজ থেমে নেই। ডিঙি বা নৌকা করে বানভাসি এলাকায় গিয়ে ত্রাণসামগ্রী বণ্টন করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ত্রাণ বিলির কাজে তদারকি করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) ধৃতিমান সরকার।
থানা ডুবে যাওয়া প্রসঙ্গে বাসিন্দাদের বক্তব্য, প্রতি বছরই এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকেন তাঁরা। বর্ষার মরসুমের শেষে ডিভিসি জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়লেই বানভাসি হয় গোটা ঘাটাল মহকুমা। কবে এই জল-যন্ত্রণার শেষ হবে, তারই উত্তর খুঁজছেন ঘাটালবাসী।