এই সেই দোকান। —নিজস্ব চিত্র।
গলার নলি কাটা অবস্থায় দোকানের ভিতর থেকে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করল পুলিশ।
রবিবার সকাল ন’টা নাগাদ কাঁথি শহরের রাজাবাজার মোড়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায়ীর নাম অজয় কুমার বেরা। রাজাবাজারে তাঁর নামে একটি স্টেশনারি দোকান আছে। দোকানের উপরেই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন অজয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়ছে, রবিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ দোকান খোলেন অজয়। দোকানের সামনেই একজন ভ্যানরিকশার চালক দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি জানান, সকাল ন’টা নাগাদ দোকানের ভিতর থেকে গোঙানির আওয়াজ শুনতে পান। কী হয়েছে দেখতে দোকানে ঢুকে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন অজয়। তাঁর গলার কাছে কাটা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে জামাকাপড়, মেঝে। অজয়ের দোকানের পাশেই তাঁর কাকুর দোকান। ওই রিকশাচালক দৌড়ে গিয়ে অজয়ের কাকুকে সব জানান। পরে অজয়ের স্ত্রীকেও খবর দেন।
খবর পেয়ে অজয়ের স্ত্রী ও মেয়ে তড়িঘড়ি নীচে নেমে আসেন। স্ত্রীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে অজয়কে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতা রেফার করেন চিকিৎসকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে যায়। পরে অজয়ের দোকানে যায়। বন্ধ দোকানের সাটার খুলে তদন্ত শুরু করে তারা। দোকানের ভিতর থেকে একটি ব্লেড ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, ওই ব্লেড দিয়েই অজয়ের গলার নলি কাটা হয়েছে।
অজয়ের স্ত্রী স্নিগ্ধা বলেন, “বাজারে স্বামীর বেশ কিছু টাকা ধার হয়েছিল। পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছিল। সম্ভবত সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে ও আত্মহত্যা করতে যায়। তা ছাড়া স্বামী একটু মানসিক ভারসাম্যহীনও ছিল।’’ যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীরা ঘটনার পিছনে শুধু পাওনাদারদের চাপ নয়, অন্য কারণ আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
কাউন্সিলর সুবল মান্না বলেন, “পাওনাদারের কথা জানা নেই। তবে অজয়ের সঙ্গে ওঁর স্ত্রীর মধুর সম্পর্ক ছিল না। বহুবার ঝামেলা হয়েছে। আমরা আলোচনায় বসে সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। এমনকী কাকা ও দাদাদের সঙ্গেও অজয়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না।’’
কাঁথি মহকুমার পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটা আত্মহত্যার চেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। তবে আমরা অজয়ের আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্তে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’