কালুর বাড়িতে পুলিশ। সোমবার শ্যামবল্লভপুরে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের মামলায় দুই পলাতক অভিযুক্তের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। গত ৩ ডিসেম্বর শীতল মান্না এবং গোলাম মেহাদি নামে ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে তমলুক আদালত। অভিযুক্তেরা আত্মসমর্পণ না করায় আদালতের নির্দেশে সোমবার তাদের অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
দুর্গাপুজো চলাকালীন মাইশোরায় দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পাঁশকুড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি কুরবান শা। তদন্তে নেমে পুলিশ বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান-সহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করে। ধৃত দীপক চক্রবর্তী এবং শ্যুটার তসলিম আরিফ ওরফে রাজাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মাইশোরার রাজশহরের বাসিন্দা শীতল এবং শ্যামবল্লভপুরের বাসিন্দা মেহাদি ওরফে কালু কুরবানের অততায়ীদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।
শীতল এবং কালুর বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়। গ্রেফতারি এড়িয়ে দু’জনে পালিয়ে যায়। গত ৩ ডিসেম্বর তমলুক মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালত ওই দুই পলাতকের নামে হুলিয়া জারি করে। এর পরে ৮ ডিসেম্বর পাঁশকুড়া থানার পুলিশ শীতল ও কালুর নামে হুলিয়া জারি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি লিফলেট আকারে বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়েও দেয়। কিন্তু ওই দুই অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করেনি।
এর পরেই তমলুক আদালত শীতল এবং কালুর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মতো এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ শ্যমবল্লভপুরে কালুর বাড়িতে যায় পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। ওই সময় কালুর বাড়িতে ছিলেন তার বাবা-মা। পুলিশ তাঁদের আদালতের নির্দেশনামা দেখিয়ে কালুর ঘরের তালা ভেঙে একটি খাট, ড্রেসিং টেবিল এবং একটি টিভি বাজেয়াপ্ত করে। রাজশহর গ্রামে শীতলের বাড়ি থেকে একটি খাট নিয়ে যায় পুলিশ। পলাতক দুই অভিযুক্তের বাড়িতেও আদালতের নোটিস লাগিয়ে দেয় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে শীতলের ‘ডান হাত’ দীপককে আটক করার দিন থেকেই শীতল এবং কালু পলাতক। কুরবান হত্যাকাণ্ডের শ্যুটার রাজাকে ১৭ নভেম্বর পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য মাইশোরায় নিয়ে এসেছিল। সেদিন রাজা রাজশহর বাজারে শীতলের একটি গুদাম ঘর দেখিয়ে সেখানে এক রাত কাটানোর কথা স্বীকার করেছিল রাজা। আর কালু খুনের এক মাস আগে থেকে তাদের এলাকা চেনানোর কাজ করত বলে জানিয়েছিল রাজা।
ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার অজয় মিশ্র বলেন, ‘‘ওই দুই অভিযুক্ত যে সব বাড়িতে থাকে, সেগুলি তাদের নামে নেই। তাই আদালতের নির্দেশে এ দিন শুধু তাদের অস্থাবর সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’