পুলিশ যথাসময়ে চার্জশিট দিতে পারেনি। তাই সবংয়ের তৃণমূলকর্মী খুনের মামলায় ধৃত ১০ জন মেদিনীপুর জেল থেকে ছাড়া পেলেন।
এই মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ১০ জন মেদিনীপুর জেলে ছিলেন। ভীম করণ নামে একজন রয়েছেন আলিপুর জেলে। সোমবারই ধৃত ১১ জনের জামিনের নির্দেশ দেয় মেদিনীপুরের সিজেএম আদালত। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এসে পৌঁছনোর পরে মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর জেল থেকে ছাড়া পান ১০ জন। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন ধৃতদের পরিজনেরা। তবে জেলা কংগ্রেসের কোনও নেতাকে জেলের সামনে দেখা যায়নি।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে গত ৮ এপ্রিল সবংয়ের দুবরাজপুরে খুন হন তৃণমূল কর্মী জয়দেব জানা। মামলায় নাম জড়ায় কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া-সহ ২৩ জন কংগ্রেস ও বাম নেতা-কর্মীর। নিহত জয়দেবের স্ত্রী মানসীদেবীর অভিযোগ, মানসবাবুরাই লোক দিয়ে ডাকিয়ে খুন করিয়েছেন জয়দেবকে। যদিও বাম ও কংগ্রেসের বক্তব্য, গ্রামে ঢুকে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার জন্য শাসাচ্ছিলেন জয়দেব। তখনই বিপত্তি ঘটে। অভিযুক্ত ২৩ জনের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিয়মমতো ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ার কথা। সেই সময়সীমা পেরোয় গত রবিবার। কিন্তু পুলিশ চার্জশিট দেয়নি।
সোমবার তাই মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে ধৃতদের জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী হরিসাধন ভট্টাচার্য। শুনানির সময় আদালত সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিবের কাছে জানতে চান, চার্জশিট জমা পড়েছে কি না। সরকারপক্ষের আইনজীবী না বললে সিজেএম মঞ্জুশ্রী মণ্ডল জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। ধৃতদের আইনজীবী হরিসাধনবাবু বলেন, “পুলিশ কেন চার্জশিট জমা দেয়নি বলতে পারব না। তবে এই মামলাটি মিথ্যা।’’
এই মামলাতেই মানসবাবুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে মেদিনীপুর সিজেএম আদালত। গত ২ জুলাই পুলিশই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানায়। তা মঞ্জুর করে আদালত। শুধু মানসবাবু নন, জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানসবাবুর ভাই বিকাশ ভুঁইয়া, সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তারপরেও কেন ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিল না পুলিশ? এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি সরকারপক্ষের আইনজীবী। জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, “তদন্ত এখনও চলছে। তদন্ত শেষের পরই চার্জশিট দেওয়া হবে।’’