রেলশহরের প্রাণকেন্দ্রে গুলি চালনার ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ফের সরব হল বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার গোলবাজার বন্ধ থাকায় এলাকা সুনসানই ছিল। তবে ঘটনার পরেই ক্ষিপ্ত জনতা রাস্তা অবরোধ করে। অবরোধকারীদের দাবি, শাসক দলের প্রচ্ছন্ন মদতেই শহরে দুষ্কৃতীদের বাড়-বাড়ন্ত।
এ দিন খড়গপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারকে ঘিরেও বিক্ষোভ চলে। হাসপাতালে যান প্রদীপবাবু। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা। প্রদীপবাবু বলেন, “আমার পরিচিত ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকজন রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী মানুষ ওখানে অশান্তি সৃষ্টি করে।”
বিরোধী দলগুলিরও অভিযোগ, শাসক দলের প্রশ্রয়েই দুষ্কৃতীরা অবাধে তোলাবাজি চালিয়ে যেতে পারছে। শাসক দলের মদতে ব্যবসায়ীদের থেকে দুষ্কৃতীরা টাকা তুলছে। সব জেনেও পুলিশ নীরব দর্শক। এ দিন তাই ব্যবসায়ীদের ডাকা বন্ধকে সমর্থন করেছে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস। এ দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিপিআই সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্টের কথায়, “পুরবোর্ড গঠনে শাসকদলকে সাহায্য করতে এই শহরকে মাফিয়াদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কাউন্সিলর কেনাবেচা করতে টাকা চেয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়েছে মাফিয়ারা। যে ব্যবসায়ীরা সেই টাকা দেয়নি তাঁদের এই হাল হবে বলে বুঝিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা।”
সিপিএমের অনিতবরণ মণ্ডল ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “যে দুষ্কৃতীরা পুরবোর্ড দখলে তৃণমূলকে সাহায্য করল তাঁরা এখনও পুলিশের প্রশ্রয়ে শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এটাই তার নমুনা।” এ দিন ঘটনাস্থলে যান জেলা মহিলা কংগ্রেস নেত্রী হেমা চৌবে, খড়্গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে, শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস। প্রত্যেকেই ঘটনার সমালোচনায় সরব হন। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “শুধু তো খড়্গপুরে নয়, দেশ জুড়ে খুনের ঘটনা ঘটছে। তবে যে কোনও খুনের ঘটনাই দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলব। বন্ধ ডেকে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।”
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পরুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘যে কোনও ঘটনার ক্ষেত্রে আমাদের কাছে অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনেক দুষ্কৃতী ধরাও পড়ছে।”