প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো প্রতিষেধক-কাণ্ডে সপ্তাহখানেক আগে কলকাতায় গ্রেফতার হয়েছে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব। সেই তদন্তে সামনে এসেছে, কলকাতা কর্পোরেশনের লোগো ব্যবহার করে কীভাবে আমজনতাকে দিনের পর দিন প্রতারিত করেছে দেবাঞ্জন। এই কলকাতা পুরসভাতেই টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং পরে তা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল কোলাঘাট বিট হাউস থানার পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছর অক্টোবরে কোলাঘাটের গোপালনগরের বাসিন্দা সুহৃদ কুমার দত্ত তমলুক আদালতে একটি আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, গোপালনগরেরই বাসিন্দা তাপস মজুমদার নামে এক ব্যক্তি ২০১৭ সালে টাকার বিনিময়ে তাঁর ছেলেকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। কলকাতা পুরসভায় লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের চাকরির জন্য তাপস সুহৃদের কাছ থেকে প্রথমে এক লক্ষ টানা নেয় বলে অভিযোগ। সুহৃদের দাবি, ওই বছরই কলকাতা পুরসভার ভিজিটর্স রুমে তাঁর ছেলে অনুরাগ দত্তের ইন্টারভিউ নেওয়া হয় এবং এসএসকেএম হাসপাতালে মেডিক্যাল ফিটনেস করানো হয়।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাপস সুহৃদের ছেলেকে চাকরির নিয়োগপত্র দেন বলে দাবি। অভিযোগ, নিয়োগপত্র দেওয়ার পর সুহৃদের থেকে আরও ছ’লক্ষ টাকা তাপস নেয়। তবে অনুরাগ ওই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিতে যোগ দিতে গেলে সেটি ভুয়ো বলে জানায় কলকাতা পুরসভা। সুহৃদের দাবি, তাপস তাঁকে সাত লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু গত কয়েক বছরেও টাকা ফেরত না পেয়ে সুহৃদ গত অক্টোবরে তমলুক আদালতে তাপস মজুমদার এবং তাঁর দু'জন সঙ্গী বিবেক চক্রবর্তী (কানু) ও উৎপল রায়ের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। বিবেকের বাড়ি কোলাঘাটের গোপালনগরে। উৎপল হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা। সুহৃদ বলেন, ‘‘তাপস কলকাতা পুরসভায় আমার ছেলের চাকরি করে দেবে বলে সাত লক্ষ টাকা নিয়ে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়েছিল। টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পূরণ করেননি। উনি শাসক দল তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ।’’
গোপালনগরে একটি ওষুধের দোকান রয়েছে তাপসের। শুক্রবার সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে কোলাঘাট বিট হাউস থানার পুলিশ। এদিন ধৃতকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তার সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে বিবেক ও উৎপল আগাম জামিন পেয়ে গিয়েছে। ধৃত ও অভিযুক্তদের সঙ্গে বড় কোনও প্রতারণা চক্রের যোগাযোগ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’ তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আর্থিক প্রতারণা মামলায় একজন গ্রেফতার হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
তাপসের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তাপস মজুমদার নামে কাউকে
চিনি না।’’