রেডিয়োয় নিয়মিত হয় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান।
জঙ্গলমহলের মানুষের মনের কথা শুনবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিজেপি সূত্রের খবর, আগামিকাল, বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ঝাড়গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন মোদী। উদ্যোক্তা বিজেপির রাজ্য কমিটি। কর্মসূচির নামেও রয়েছে মন। ‘ভারত কী মন কী বাত, কার্যকর্তা কী সাথ’। বিজেপি সূত্রে খবর, সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওই লাইভ ভিডিয়ো কনফারেন্স হবে। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী জানান, পশ্চিমবঙ্গের অন্য জেলাতেও ভিডিয়ো কনফারেন্স অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। তবে এ রাজ্যের মধ্যে কেবল ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কথা বলবেন।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলে জঙ্গলমহলের মনোভাবের আঁচ মিলছে। শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। তাই কি লোকসভা ভোটের আগে ঝাড়গ্রামে এত জোর? আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলের মানুষের মনে বিরাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষ কেউই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যাবেন না। দলের কর্মীদের সাধারণ মানুষ সাজিয়ে বিজেপি-র এই চমক এখানে কোনও সুবিধা করতে পারবে না।’’ আর সুখময় বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে তৃণমূল বুঝতে পেরেছে মানুষ ওদের সঙ্গে নেই। তাই পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসকে হাতিয়ার করে ওরা জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এতে কোনও লাভ হবে না।’’
কর্মসূচি অনুযায়ী তো মোদীর কথা বলার কথা দলীয় নেতাদের সঙ্গে। সেখানে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনার অবকাশ কোথায়? বিজেপি সূত্রের খবর, সাধারণ ভাবে বিষয়টি তাই। অর্থাৎ ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি নেতাদের মনের কথা শোনার কথা প্রধানমন্ত্রীর। তবে এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, ঝাড়গ্রামে বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনের কর্মসূচির ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রমী হতে পারেন মোদী। শেষমুহূর্তে অন্য কিছু না ঘটলে জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাঁদের কথা শোনার কথা তাঁর।
মোদীর সঙ্গে কথা বলানোর জন্য কোন কোন গ্রাম থেকে কাদের নিয়ে আসা হবে সে ব্যাপারে স্থির করতে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামে দলের জেলা কার্যালয়ে জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতাপ বলেন, ‘‘ওই ভিডিও কনফারেন্স সারা দেশ জুড়ে সম্প্রচারিত হবে। প্রতিটি রাজ্যের একটি করে এলাকার বাসিন্দা ও দলীয় কার্যকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গে দলের ১২০০ মণ্ডলে সরাসরি ভিডিও সম্প্রচারের ব্যবস্থা থাকছে। এ রাজ্যের মধ্যে কেবল ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা ও দলীয় কার্যকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন, তাই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার ওই কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ঝাড়গ্রামে থাকার কথা।
এবার ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনটির উপর বিশেষ নজর রয়েছে বিজেপি-র। গত পাঁচ বছরে তৃণমূলের সাংসদ উমা সরেনকে নিয়ে শাসকদলের অন্দরেই ‘অস্বস্তি’ ও ‘অসন্তোষ’ রয়েছে। সাংসদ তহবিলের বেশির ভাগ টাকা উমা খরচ করতে পারেননি। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে বুথস্তরে প্রচারে নেমেও পড়েছেন বিজেপি কর্মীরা। গেরুয়া নেতৃত্ব মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মনের খবর জানলে তা আখেরে অক্সিজেন জোগাবে নেতা-কর্মীদেরই।