১০০ টাকা ২১ পয়সা দরে পেট্রল বিক্রি হচ্ছে মেদিনীপুর শহরে। নিজস্ব চিত্র।
অরণ্যশহরে সেঞ্চুরি হয়েছিল আগেই। এ বার পাশের জেলার সদর শহর-সহ একাধিক জায়গায় সেঞ্চুরি হাঁকাল পেট্রল!
সোমবার মেদিনীপুরের বিভিন্ন পাম্পে পেট্রলের দাম ছিল লিটার প্রতি ১০০ টাকা ১১ পয়সা থেকে ১০০ টাকা ২৩ পয়সার মধ্যে। মেদিনীপুরে পাম্পে পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ১০০ টাকা ১১ পয়সা (ইন্ডিয়ান ওয়েল) এবং লিটার প্রতি ১০০ টাকা ২৩ পয়সা (হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম)। গড়বেতার পাম্পগুলিতেও ১০০ টাকা ৪৫ পয়সা লিটার দরে পেট্রল বিক্রি হয়েছে। এ দিন মেদিনীপুরে ডিজেলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৯২ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে ৯২ টাকা ৭৬ পয়সার মধ্যে। সেঞ্চুরি থেকে নামমাত্র দূরে।
জ্বালানির এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে দোকান, বাজারেও। দামের ছ্যাঁকায় জেরবার হবেন সাধারণ মানুষ। এ দিন পাম্পে দাঁড়িয়েই কয়েকজন বলেন, ‘‘পেট্রল ১০০ পেরোল। ডিজেলের দামও চড়ছে। রান্নার গ্যাস সাড়ে ৮০০ পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ কোনও সরকারেরই কোনও হেলদোল নেই।’’ এ জন্য বিজেপি সরকারকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার জনবিরোধী নীতি নিয়ে চলছে। দাম নিয়ন্ত্রণে বিজেপি সরকার ব্যর্থ।’’ তৃণমূলের গড়বেতা ১ ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষও বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের ভাল চায় না। মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে গড়বেতা জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে।’’ বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘এটা সাফল্য বা ব্যর্থতার বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক বাজারের উপরেই আমাদের দেশে পেট্রোল, ডিজেলের দাম নির্ভর করে। এটা কেন্দ্রের হাতে নেই।’’
একে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত। তারই মধ্যে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে গিয়েছে। পথে বাস নামা ঘিরেও রয়েছে অনিশ্চয়তা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, ‘‘জ্বালানির দাম বেড়ে চলেছে। বাস নামানো আরও মুশকিল হবে।’’ সমস্যায় গাড়ির মালিকেরাও, বিশেষ করে মোটরবাইক এবং ছোট গাড়ির মালিকেরা। ব্যবসায়ীদের একাংশ মানছেন, এই ভাবে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বেড়ে চলায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং আনাজের দামও বাড়বে। মেদিনীপুরের বাসিন্দা সন্দীপ সরকার বলেন, ‘‘যে ভাবে দাম বাড়ছে তাতে এ বার তো আর বাইক চালাতে পারব না।’’