প্রতীকী ছবি
ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্য ফিরলে করোনা সতর্কতা বিধি মেনে নিয়ম মতো তাঁদের কোয়ারান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। অথচ হাসপাতালে আসা রোগীর করোনা ধরা পড়ার পরে তাঁর সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হয়নি কোয়ারান্টিনে। এমনই অভিযোগ তুলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ওম স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ।
এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতল সূত্রে খবর, গত ১১ জুন এগরার বছর বিয়াল্লিশের এক ব্যক্তি হৃদরোদে আক্রান্ত হয়ে সেখানে ভর্তি হন। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে অন্য রোগীরাও ছিলেন। ১১ জুন রাতেই এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১২ জুন তাঁর লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৩ জুন রাতে তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বিষয়টি জানার পরে আইসিসিইউ ও জরুরি বিভাগ তড়িঘড়ি শনিবার রাতে জীবাণুমুক্ত করেন এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, জরুরি বিভাগে চিকিৎসা থেকে আইসিসিইউ পর্যন্ত চিকিৎসক ও নার্স মিলিয়ে প্রায় পঁচিশজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন। অভিযোগ সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার কথা ভাবেননি হাসপাতালের সুপার। করোনা সংক্রমণের সচেতনায় তাঁদের পাঠানো হয়নি কোয়রান্টিনে। রবিবার সকালেও তাঁদের অনেকেই হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন। ফলে এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। অবিলম্বে তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, সংক্রমণ রুখতে চিকিৎসক থেকে নার্সদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা বিধি নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের একজন নার্স বলেন, ‘‘জেনে বুঝে স্বাস্থ্য দফতর আমাদের বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অবিলম্বে যাঁরা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আইসিসিইউ-সহ ওই হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগ জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া যে সমস্ত রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসাক জন্য আসেন, তাঁদের ক্ষেত্রে করোনা সুরক্ষা বিধি মেনেই কাজ করেন চিকিৎসক ও নার্সরা। তাই ভয়ের কোনও কারণ নেই।’’ কেন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা বিধি মেনে কোয়রান্টিনে পাঠানো হল না? এ প্রশ্নের জবাবে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাথমিক সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওঁদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর প্রয়োজন নেই।’’