কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে ভিড়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
যেন সংক্রমণের মতো ছড়াচ্ছে বিক্ষোভের আঁচ!
কাটমানি ফেরত চেয়ে এ বার বিক্ষোভ হল জেলার সদর শহর মেদিনীপুরের এক বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে। সরকারি বাড়ি প্রকল্পের একাংশ উপভোক্তা রবিবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। উপভোক্তাদের দাবি, বাড়ি তৈরির নামে তাঁদের থেকে কাটমানি নিয়েছেন ওই কাউন্সিলর।
ইতিমধ্যে রাজ্যের অনেক শহরেই এমন বিক্ষোভ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিক্ষোভের পিছনে বিজেপি এবং সিপিএমের ইন্ধন থাকার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। তবে এ ক্ষেত্রে ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের দাবি, এদিনের বিক্ষোভের পিছনে নাকি দলেরই একাংশের ইন্ধন রয়েছে।
এ দিন সকালে শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর রোকাইয়া খাতুনের বাড়ির সামনে জড়ো হন ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পের কয়েকজন উপভোক্তা। এই প্রকল্পে শহুরে এলাকায় গরিব মানুষের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এই প্রকল্পে ৩০ জন উপভোক্তা রয়েছেন। তাঁদেরই কয়েকজন এ দিন বিক্ষোভে শামিল হন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন রাজেন বিবি। তাঁর স্বামী শেখ আনসার এই প্রকল্পের উপভোক্তা। রাজেনের অভিযোগ, ‘‘কাউন্সিলর ৪৭ হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে। এখনও বাড়ির কাজ শেষ হয়নি।’’
শুধু কাটমানি নেওয়াই নয়, বিক্ষোভকারীদের একাংশ এ দিন অভিযোগ করেন, ওই কাউন্সিলর তাঁদের ব্যাঙ্কের পাশ বই, চেক বই, সব নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। বারবার এ সব চেয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তাঁদের ধমকানো হয়েছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর রোকাইয়া খাতুন অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। রোকাইয়া বলেন, ‘‘গরিব মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছে। দলেরই কিছু লোক ভুল বুঝিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি কাটমানি নিইনি। নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এলাকায় আমার পরিবারের একটা নাম রয়েছে। দলেরই কয়েকজন বদনাম করার চেষ্টা করছে। এক সময়ে আমরাই ওদের বিভিন্ন পদে বসিয়েছি।’’
কিন্তু কারা তাঁর বদনাম করার চেষ্টা করছে? প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ রোকাইয়া। তিনি সব নাম দলের অন্দরেই জানাবেন বলে জানিয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর। লোকসভা ভোটের নিরিখে শহরে ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৮টি ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এই ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে এই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডও। সেই প্রসঙ্গ টেনে রোকাইয়া বলেন, ‘‘মানুষের পাশে রয়েছি বলেই তো ওয়ার্ডে তৃণমূলকে এগিয়ে রাখতে পেরেছি।’’
কাটমানি ফেরত চেয়ে বিদায়ী কাউন্সিলরের বাড়িতে বিক্ষোভ আর এ ক্ষেত্রে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ইন্ধনের অভিযোগ করেছেন বিদায়ী কাউন্সিলর। তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি দেখছি। দল যা পদক্ষেপ করার করবে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।