জামাইষষ্ঠী কাটল নিভৃতাবাসেই।
দূর্বা, ধান, চন্দন ও মঙ্গলপ্রদীপ সব আয়োজনই ছিল। তবু করোনার কারণে বড্ড ফিকে গেল জামাইষষ্ঠী। পঞ্চ ব্যঞ্জনে বরণ নয়, বরং করোনা আতঙ্কে নমো নমো করেই জামাই বরণ করলেন শাশুড়িরা।
জামাইষষ্ঠীতে শশুরবাড়ি যেতে চাইলেও উপায় নেই। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরায় অনেক জামাইকেই চলে যেতে হয়েছে নিভৃতবাসে। গত চার দিনে জেলা জুড়ে করোনা সংক্রমণ তরতরিয়ে বেড়েছে। শুধু এগরা মহকুমাতেই নতুন করে সাত জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। পটাশপুরে দুটি পরিবারের তিনজন করোনায় আক্রান্ত। শতাধিক পরিযায়ী এখনও নিভৃতবাসে রয়েছেন। বাড়ি ফিরলেও পরিজনদের কাছে আর ফেরা হয়নি তাঁদের। সরকারি তত্ত্বাবধানে নিয়মিত চলছে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এই আবহে তাই জামাইষষ্ঠীতে গররাজি জামাইরাই। শ্বশুরবাড়ির আবদার থাকলেও তা ফিরিয়ে গিয়েছেন বেশিরভাগ জামাই।
তবে মুশকিল বেশি নববিবাহিতদের। জীবনে প্রথম জামাইষষ্ঠী। তাই শ্বশুরবাড়ির আবদার রাখতে করোনা সতর্কতা বিধি মেনেই এঁদের অনেকে পা বাড়িয়েছেন শ্বশুরবাড়ির দিকে। তবে মেয়ে-জামাই একসঙ্গে নয়। নিয়ম রক্ষায় শুধু জামাইকে পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে শ্বশুর-শাশুড়িকে।
এগরা পুর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি পূর্ণ দেব-এর, তাঁর কথায়, ‘‘করানোর জন্য ভয় তো রয়েছেই। তবে শ্বশুরবাড়ি থেকে বার বার বলায় একাই গিয়ে কোনওরকমে নিয়মরক্ষা করে বাড়ি ফিরেছি। সুস্থ থাকলে সামনের বছর ভাল করে জামাই আদর নেওয়া যাবে।’’
আবার প্রথম জামাইষষ্ঠী হওয়ায় শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু নিভৃতবাসে থাকায় তা সম্ভব হয়নি পটাশপুরের বেশ কিছু পরিযায়ী যুবকের। এঁদের কেউ মহারাষ্ট্র, কেউ গুজরাত থেকে ফিরে এলাকায় নিভৃতবাসে রয়েছেন। এমনই একজন শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রথম জামাইষষ্ঠী নিয়ে একটা অন্য অনুভূতি ছিল। কিন্তু করোনার জন্য সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। এখন নিজেকে সুস্থ রেখে পরিবারের কাছে ফেরাটাই জরুরি। পরের বার দেখা যাবে।’’