—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, কুড়মিদের নিয়ে রাজ্যের তরফে নতুন করে সমীক্ষা হবে। তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারেও কুড়মিদের জাতিসত্তার দাবির বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে ভোটের পর লোকসভা ও বিধানসভার সদ্য অধিবেশনে কুড়মিদের দাবি উত্থাপিত হয়নি। শাসক বা বিরোধী, কোনও সাংসদ, বিধায়কই এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবটুকুও আনেননি বলে দাবি কুড়মি সামাজিক সংগঠনগুলির। মুখ্যমন্ত্রীর ঝাড়গ্রাম সফরের তাই নতুন করে উঠছে কুড়মিদের ওই সমীক্ষার দাবি।
বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার দু’দিনের ঝাড়গ্রাম সফরে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের রাজ্যস্তরীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। আদিবাসী দিবস হলেও সে দিন কুড়মিদের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী কি কোনও বার্তা দিতে পারেনষ জল্পনা শুরু হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নবান্নে বিভিন্ন কুড়মি সামাজিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে কুড়মিদের নিয়ে সমীক্ষার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর পুরুলিয়ার সভাতেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘মাহাতোদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি আছে—তাদের জনজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হোক। আমরা যেটা শুরু করেছি, কোন কোন ভৌগোলিক অঞ্চলে মাহাতোরা থাকেন, প্রকৃত যারা মাহাতো, তাদের জন্য একটা সমীক্ষা করছি।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে কুড়মি ক্ষোভ এবং জঙ্গলমহলের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দল কুড়মিরা বোর্ড গড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী কুড়মিদের সমীক্ষার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর লোকসভায় জঙ্গলমহলে ভাল ফল করেছে তৃণমূল। ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া আসন তিনটি বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। তবে বিষ্ণুপুর এবং কুড়মি অধ্যুষিত পুরুলিয়া লোকসভায় এ বারও জিতেছে বিজেপি। ফলে, আগামীতে কুড়মিদের দাবি কতটা মান্যতা পাবে, সংশয়ে রয়েছেন কুড়মি নেতৃত্বের একাংশ।
ইতিমধ্যে আদিবাসী কুড়মি সমাজের সঙ্গে মিশে গিয়েছে অনুপ মাহাতোর নেতৃত্বাধীন আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজ। জাতিসত্তার আন্দোলনে বাকি কুড়মি সামাজিক সংগঠনগুলিকেও একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের ‘মূল মানতা’ (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো। তবে তাতে এখনও সাড়ে মেলেনি। অজিতপ্রসাদ বলছেন, ‘‘লোকসভা ভোটে তূণমূলের ইস্তাহারে আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়। ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীও কুড়মিদের বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কাছে আবেদন— কুড়মিদের জাতিসত্তার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের তরফে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে সেটা স্পষ্ট করুন।’’