অমিত মণ্ডল
বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম, মাতঙ্গিনী, সতীশ সামন্তের গৌরবময় মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার অন্তর্গত চাপদা গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম আমার। সেই সময় মেদিনীপুর ছিল জেলা সদর। সামান্য কাজেও বাবা-দাদুকে ৬০ কিলোমিটার উজিয়ে যেতে হত। পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত ছিল না একেবারেই। আমারও বেড়ে ওঠা এই মেদিনীপুরেই।
পড়াশোনার সূত্রে অবিভক্ত মেদিনীপুর সদরে প্রথম আসা। এই শহর ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে আমার উচ্চ শিক্ষা আর মেসের জীবন। ততদিনে অবশ্য মেদিনীপুর ভেঙে হয়ে গিয়েছে নতুন জেলা, পূর্ব মেদিনীপুর। জেলা বিভাগের সূত্রে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বে পেয়েছি জেলা সদর তমলুককে।
তবে এই খণ্ডের মধ্যেও ঐক্যই আমার চোখে পড়ে। কাঁসাই নদী আর ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যে তিনটি জেলায় ৩৫ বছর ধরে উপলব্ধি করেছি পূর্বের পরেশ মাইতি-অশোক দিন্দা আর পশ্চিমের সুস্মিতা সিংহরায়-দীপক অধিকারীকে। সমস্যাতেও তিন জেলাকে বেঁধে রেখেছে ঐক্য। ঘাটাল-সবংয়ের বন্যা, হলদিয়া-কোলাঘাটের দূষণ, ধেড়ুয়ার নদী ক্ষয়, শালবনির হাতির হানায় মৃত্যু, আমলাশোলের ঐতিহাসিক ক্ষুধা মেদিনীপুরের বুকেই মোচড় দেয়।
এত বিচ্ছেদের মধ্যেও অভিন্ন মেদিনীপুরের হৃদয়বীণায় ধ্বনিত হয় একটাই কথা-‘আমাদের মেদিনীপুর’।
লেখক পেশায় মেদিনীপুরের ধেড়ুয়া অঞ্চল শতবালা হাইস্কুলের শিক্ষক