রাস্তা না করেই টাকা ‘ভ্যানিশ’! নালিশ জেলাশাসকের কাছে

স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড় উত্তর হিংলি পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর বুথ স্থানীয় একটি শীতলা মন্দির থেকে একটি পান বরোজ পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা কংক্রিটের করার কথা ছিল। সেই রাস্তা এখনও মোরামের রয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০০:২৪
Share:

হয়নি কংক্রিটের রাস্তা।

কংক্রিট তো দূর অস্ত! একটা ইটও পড়েনি। অথচ, এ রকম একাধিক মোরাম রাস্তাকে ঢালাই করার হিসাবে দেখিয়ে সরকারি তহবিল থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। হলদিয়া উন্নয়ন ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির’ নালিশ জানিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের নানাস্তরে অভিযোগ জানালেন এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড় উত্তর হিংলি পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর বুথ স্থানীয় একটি শীতলা মন্দির থেকে একটি পান বরোজ পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা কংক্রিটের করার কথা ছিল। সেই রাস্তা এখনও মোরামের রয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা। কিন্তু সরকারি প্রকল্পের ওয়েবসাইটের আপলোড করা তথ্যতে দেখা যাচ্ছে, গত ৮ জানুয়ারি রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ দাবি করে মাস্টাররোলে খরচের হিসাব দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ, সেই মত গত মার্চে খরচের সংক্রান্ত যাবতীয় টাকা তুলেও নেওয়া হয়।

একই ভাবে পাশের গ্রাম বাড় সুন্দরাতেও রাস্তা কংক্রিট না করেই টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকাবাসী নন্দদুলাল দাসের বাড়ি থেকে সোহরাব আলির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা কংক্রিট করে দেওয়ার কথা ছিল পঞ্চায়েতের। সেই রাস্তা তৈরি না করেই গত ২৭ এপ্রিল মাস্টার রোল জমা দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, হলদিয়া উন্নয়ন ব্লকের বাড় উত্তর হিংলি গ্রাম পঞ্চায়েতে চলতি বছর ৬০টি রাস্তা কংক্রিট করার সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। সরকারি ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ যাবৎ ২২টি রাস্তা কংক্রিট করার কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২২টির মধ্যে অধিকাংশ রাস্তাই তৈরি হয়নি এবং ভুয়ো মাস্টাররোলের মাধ্যমে পঞ্চায়েত ও ঠিকাদার সংস্থাগুলি সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এর প্রেক্ষিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে জেলাশাসকের দফতরে।

নিতাইচাঁদ মণ্ডল নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ব্লক অফিসে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা বিষয়টিকে ভুয়ো বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বাধ্য হয়ে জেলাশাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’

রাস্তা কংক্রিটের না করেই কীভাবে টাকা তুলে নেওয়া হল, তা জানার জন্য ফোন করার হয়েছিল সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক সুখেন্দু ভৌমিককে। তিনি ফোন ধরেননি। বাড় উত্তর হিংলি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ওয়াহাব আলি বলেন, ‘‘বর্তমান পঞ্চায়েত বোর্ডের আমলে ৫৬টি রাস্তার মধ্যে ২২টি রাস্তার কাজই শেষ হয়েছে। শুধু ওই সব রাস্তার নির্মাণ খাতে বরাদ্দ অর্থ খরচ করা হয়েছে। বাকি কোনও অর্থ খরচ করা হয়নি বলে চ্যালেঞ্জ করতে পারি।’’ হলদিয়ার বিডিও তুলিকা দত্ত বন্দোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘১০০ দিনের প্রকল্পে রাস্তা নিয়ে বেশ কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। আমরা সব অভিযোগ তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement