এ তো রীতিমতো গণপিটুনির হুমকি! মেদিনীপুর শহরে বাইক দৌরাত্ম্যের অভিযোগ নতুন নয়। এর জেরে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। নিমতলাচকও তার ব্যতিক্রম নয়।
মেদিনীপুর শহরের নিমতলাচকের অদূরেই ছোটবাজার। আর সেখানে গেলেই চোখে পড়বে ফেস্টুনটা। সাদার উপর নীল কালিতে লেখা লেখা, ‘মারের হাত থেকে বাঁচতে এই রাস্তায় গাড়ি আস্তে চালান’। নীচে লেখা এলাকাবাসীবৃন্দ।
সম্প্রতি বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলেও বাইক থেকে প়়ড়ে গিয়ে জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তা বলে মারের নিদান? পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলছেন, ‘‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়।’’
‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পকে বু়ড়ো আঙুল দেখিয়েই বেপরোয়া গতিতে ছুটছে বাইক। অভিযোগ, পুলিশের নজরদারির অভাবেই বা়ড়ছে এই প্রবণতা। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘মেদিনীপুরে পুলিশি সক্রিয়তা বাড়ানো হয়েছে। জোরে বাইক চালালেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে।’’ আইন হাতে তুলে নেওয়াকে সমর্থন না করলেও জেলা পুলিশের এক কর্তা বললেন, ‘‘এলাকার মানুষ সতর্ক হয়েছেন। অন্যদের সতর্ক করছেন। এটা ভাল দিক।’’
ওই ফেস্টুনের পাশে রয়েছে আরেকটি ফেস্টুন। সেখানে লেখা ‘গলির মুখে দাঁড়ান, গাড়ি আস্তে চালান’। এই ফেস্টুনে অবশ্য দুলদুল আহমেদের নাম লেখা রয়েছে। মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রয়াত নাজিম আহমেদ এই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন। দুলদুল তাঁরই ভাই। কেন এমন ফেস্টুন? দুলদুল বলছিলেন, ‘‘বাধ্য হয়েই এই ফেস্টুন দিয়েছি। সাঁ সাঁ গতিতে বাইক ছোটে এখান দিয়ে। সঙ্গে বিকট আওয়াজ। দুর্ঘটনাও ঘটে। সতর্ক করতেই এই ফেস্টুন।’’
সঙ্কীর্ণ রাস্তায় বাইকের সংখ্যা বাড়তে থাকায় যানজট বাড়ছে। অনেকেই যানজট এড়াতে গলিপথ দিয়ে যাতায়াত করেন। কোনও বাইকে আরোহীর সংখ্যা তিন। কোনও বাইকে আরও বেশি! সঙ্কীর্ণ বা গলিপথে বিকট আওয়াজে ছোটে বাইক। বাইক চালকদের অনেকের মাথায় হেলমেট থাকে না। অনেকের বয়সও কম। অনেকের আবার লাইসেন্সও থাকে না। বাইক দৌরাত্ম্যের জেরে রাস্তায় বেরোনোটা অনেকের কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাউন্সিলর সৌমেন খানের কথায়, ‘‘যুবকদের একাংশের জোরে বাইক চালানোর প্রবণতা রয়েছে। জোরে বাইক চালানোর ফলে পথচলতি মানুষ সমস্যায় পড়েন। বিপত্তিও ঘটে।’’