ঝাড়গ্রাম, চন্দ্রকোনা রোডের পর এ বার কেশিয়াড়ি। রাতের অন্ধকারে ছেলেধরা সন্দেহে ওড়িশার তিনজনকে ধরে মারধরের অভিযোগ উঠল কেশিয়াড়ির খাজরা গ্রাম পঞ্চায়েতের আম্বিগেড়িয়া গ্রামে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই আমগেড়িয়া গ্রামে বহিরাগত যুবকদের আনাগোনা বাড়ছে। কখনও মোটরবাইকে আবার কখনও গাড়িতে ওই যুবকেরা গ্রামে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ায়। ওই যুবকদের কিছু জিজ্ঞাসা করতে গেলেই তাঁরা পালাচ্ছিল বলেও অভিযোগ। তাই সম্প্রতি গ্রামের বাসিন্দারা পালা করে এলাকায় রাত পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে গ্রামের রাস্তায় একটি দ্রুতগামী গাড়ি আটকায় পাহারারত যুবকেরা। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, গাড়িটি কোথায় যাচ্ছে প্রশ্ন করলেও সদুত্তর মেলেনি। উল্টে পালিয়ে যায় গাড়ির চালক। গাড়িতে থাকা বাকি তিনজনকে পাকড়াও করে স্থানীয় একটি ক্লাব ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় গাড়িটিও। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রকান্ত মান্নার দাবি, “বেশ কয়েকদিন ধরেই গ্রামে ছেলেধরা ঘোরাফেরা করছে। তাই রাতে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মঙ্গলবার মোহুলডাঙার দিক থেকে আসা ওই গাড়ির তিন জন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছিল না। গ্রামের লোকেরা ওদের মারধর করে।’’
পুলিশ সূত্রে দাবি, থানায় গিয়ে প্রহৃত তিন যুবক জানিয়েছে, নারায়ণগড়ের বাসিন্দা গগন বেরার বাড়িতে পুজো ছিল। পুজো করার জন্য ওড়িশার পুরোহিত তন্ময় অধিকারীকে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর দুই আত্মীয়। পুজো শেষে তাঁরাই ওই পুরোহিতকে ছাড়তে গাড়িতে ওড়িশায় যাচ্ছিলেন। রাস্তার মাঝে গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে তাঁদের অকারণে ছেলেধরা সন্দেহ মারধর করা হয়।
বুধবার আম্বিগেড়িয়া গ্রামের জনাকয়েক বাসিন্দাকেও আলোচনার জন্য থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, থানায় গিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দারা জানায়, ভুল বোঝাবুঝির জন্য এই ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ না জানানোয় প্রহৃত তিন যুবককে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আক্রান্ত যুবকেরাও এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি বলে পুলিশ
সূত্রে দাবি।