ভিড়ের চেনা ছবি নেই কাঁথির একটি মদের দোকানে। নিজস্ব চিত্র
দোকান না হয়েছে খুলেছে। কিন্তু জোগান কোথায়! তপ্ত রোদে লাইন দিয়েও তাই বিলিতি মদে গলা ভেজাতে পারছেন না অনেকে! এতে কাঁথি অল্প হলেও কমেছে মদ ক্রেতাদের ভিড়।
দিন চারেক আগে মদের দোকান খোলার ব্যাপারে ছাড় দিয়েছে সরকার। তারপর থেকেই কাঁথি-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় উপচে পড়েছিল ক্রেতাদের ভিড়। সেই ভিড়ে না মানা হয়েছে করোনা সংক্রমণ রোখার নিয়মবিধি, না মানা হয়েছে অন্য নিয়ম। তবে এ দিন থেকে কাঁথি শহরে বিভিন্ন মদের দোকানে ‘নেশাড়ু’দের কিছুটা কমেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। সৌজন্য— জোগানে ঘাটতি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কাঁথি শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় ন’টি সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত মদের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে দু’য়েকটি ছাড়া সবক’টি দোকানই খোলা রয়েছে। কিন্তু সেখানে নিয়ে নিজেদের চাহিদা মতো মদ না কিনতে পেরে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। কাঁথি শহরের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি বিদেশি সংস্থার মদ আনতে গিয়েছিলাম। পাঁচটি দোকান ঘুরেছি। কিন্তু কোথাও পাইনি। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম দামের মদ কিনে বাড়ি ফিরেছি।’’
দোকান খোলার পাঁচ দিনের মাথায় যে মদের দোকানে টান পড়েছে, তা মানছেন মদ বিক্রেতাদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিঘা বাইপাস সংলগ্ন একটি মদের দোকানের মালিক বলেন, ‘‘লকডাউনে মদের জোগান বন্ধ। বিদেশি সংস্থার হুইস্কি যা মজুত ছিল, তা প্রথম দিনেই শেষ হয়েছে।’’ একই দাবি শহর সংলগ্ন একাধিক মদের দোকান মালিকের।
তবে এই ক’দিনে মদ বিক্রি করে যে রাজ্যের কোষাগারে ভালই রাজস্ব জমা পড়েছে, তা জানা যাচ্ছে আবগারি দফতর সূত্রে। জেলা আবগারি দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে পূর্ব মেদিনীপুরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকান থেকে বিভিন্ন সংস্থার যে পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে, তাতে দিনে গড়ে দু’কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। যদিও সম্প্রতি জোগান কম থাকায় সেই রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কিছুটা কমে গিয়েছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্ট দফতরের। এ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আবগারি দফতরের সুপার জতন মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তবে জেলার এক আবগারি কর্তার দাবি, গোটা জেলাতেই বিদেশি সংস্থার মদের জোগান একেবারেই নেই। এর ফলে মদের ক্রেতারা চাহিদা মতো মদ বিক্রি করতে পারছেন না।
তবে যে যাই বলুক, জেলাবাসীর অনেকেরই বক্তব্য— ‘জোগান বন্ধে মদের লাইনে ভিড় তো কমল! এটাই আশার কথা।’’