প্রতীকী চিত্র।
ব্যান্ডেজের কাপড়ের ফাঁসে ঝুলন্ত এক রোগীর দেহ উদ্ধার হল হাসপাতালের শৌচাগারে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা নিয়ে। তবে বছর চল্লিশের মৃত ওই রোগীর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই তাঁকে ভর্তি করে শুরু হয়েছিল চিকিত্সাও। তারপরই রবিবার রাতে শৌচাগারে তাঁর দেহ মেলে। অনুমান, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
বছরখানেক আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালের দো’তলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন এক রোগী। আর এ বার তো একেবারে ওয়ার্ডের মধ্যে শৌচাগারে এই ঘটনা ঘটল। ওই ওয়ার্ডে সিসিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে। তাও এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে হাসপাতালের নিরাপত্তা। চিকিত্সাধীন রোগী শৌচাগারে গিয়ে আত্মহত্যা করলেন, অথচ কেউ কিছু বুঝতে পারলেন না কেন, সেই প্রশ্নও সামনে আসছে। হাসপাতালের এক কর্তার স্বীকারোক্তি, “এমন ঘটনার পরে কিছু প্রশ্ন তো উঠবেই।’’
হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা অবশ্য বলেন, “রাতে অনেকেই শৌচাগারে যান। ওই রোগীও গিয়েছিলেন। শৌচাগারে নজর রাখা অসম্ভব।’’ পুলিশের এক সূত্রে খবর, এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মেদিনীপুর মেডিক্যালের ওই ঘটনায় সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মঘাতী রোগীর নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। আগে নাম-পরিচয় জানাটা খুব জরুরি।’’
হাসপাতাল এবং পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যার দিকে বছর চল্লিশের ওই যুবককে নিয়ে আসেন কয়েকজন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, যুবকটি বিদ্যুতের খুঁটির উপর থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশও জানতে পেরেছে, রবিবার বিকেলে খড়্গপুর গ্রামীণের জকপুরের কাছে এক বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে পড়েছিলেন ওই যুবক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এমন কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী পুলিশ কর্তার কথায়, “মানসিক ভারসাম্যহীন না হলে কেউ এ ভাবে বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে পড়েন না।’’ স্থানীয় কয়েকজন দেখতে পেরে ওই খুঁটির সামনে এসে জড়ো হন। তখন খুঁটির ওপর থেকে লাফ মারেন ওই যুবক। খুঁটি থেকে পড়ে গিয়ে জখমও হন। স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে এনে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, ওই যুবকের হাতে-পায়ে-মাথায় চোট ছিল। সন্ধ্যায় তাঁর স্ক্যান হয়েছিল। রাতে একটা অস্ত্রোপচারও হয়। শুরু থেকেই ওই যুবক ভর্তি ছিলেন হাসপাতালের মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডের পাশেই শৌচাগার রয়েছে। রাতে তিনি শৌচাগারে যান। পরে অন্য এক রোগী শৌচাগারে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ দেখেন। সোমবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তিবাবু বলেন, “ওই যুবক অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিত্সাও শুরু হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পরে ওয়ার্ডেই ছিলেন তিনি। রাতের দিকে শৌচাগারে গিয়ে আত্মহত্যা করেন।’’