পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে এলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দায়িত্ব পেয়েই আজ, সোমবার ঝাড়গ্রাম শহরে মিছিল করতে আসার কথা পার্থের। তৃণমূল সূত্রের খবর, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অরণ্যশহরে ওই মিছিল শেষে পথসভাও করার কথা তাঁর।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের পার্থকে জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছেন। এরপর ফেসবুকে কেউ লিখেছেন, ‘ঝাড়গ্রাম জেলায় শুধু শুভেন্দুদাকে চাই।’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘পতাকা বাঁধবেন শুভেন্দু। বন্ধ পার্টি অফিস খোলাবেন শুভেন্দু, ভোটে জেতাবেন শুভেন্দু। তারপরেও জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে আরও একজন’? তৃণমূলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ গুলিতেও দলের কর্মীরা লিখেছেন, ‘ঝাড়গ্রামে কেবল শুভেন্দু অধিকারীকেই চাই’। এমন পরিস্থিতিতে পার্থের কর্মসূচি সফল করার জন্য রবিবার ঝাড়গ্রাম টাউন হলে দলের শহর কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন। ওই বৈঠকে প্রাক্তন কাউন্সিলদের কয়েকজন ছিলেন না। তবে দলের শহর কমিটির অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা ছিলেন।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলায় তৃণমূলের বিপর্যয়ের জেরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে শুভেন্দুকে জেলার সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্বও দেন নেত্রী। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত শুভেন্দুকে সেভাবে ঝাড়গ্রাম জেলায় দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বরং লোকসভা ভোটের প্রার্থীর মনোনয়ন থেকে প্রচারের যাবতীয় কর্মসূচির পুরোভাগে পার্থকেই দেখা গিয়েছিল। লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে ১১ হাজারের বেশি কিছু ভোটে বিজয়ী হন বিজেপি-র কুনার হেমব্রম। দলের বিপর্যয় সামলাতে জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে পার্থকে সরিয়ে শুভেন্দুকে পূর্ণ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেন তৃণমূল নেত্রী। পরাজিত প্রার্থী বিরবাহা সরেনকে জেলা তৃণমূলের সভানেত্রীর পদ দেন মমতা। খড়গপুর উপনির্বাচনে শুভেন্দুর হাত ধরেই জয় আসে তৃণমূলের।
২০২০ সালে ঝাড়গ্রাম পুরভোট হওয়ার কথা। তৃণমূলের অন্দরের খবর, জেলার লালগড়, নয়াগ্রাম, জামবনি, ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের মতো কয়েকটি ব্লকে শুভেন্দুর অনুগামী নেতারা রয়েছেন। শহরেও নেতা-কর্মীদের একাংশ শুভেন্দু-অনুগামী। তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরভোটের আগে ফের দুই পর্যবেক্ষক দায়িত্বে আসায় নিচুতলার কর্মীদের একাংশ বিভ্রান্ত। জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা জানান, শহরে পিকে-র (ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর) টিম প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরছে। তথ্য সংগ্রহ করছে। ফলে, পুরভোট নিয়ে কর্মীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। নেত্রীর নির্দেশ মতো পর্যবেক্ষকেরা দলের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন। পর্যবেক্ষকদের নির্দেশ মতো কর্মীরা কাজ করবেন। দু’একজন সামাজিক মাধ্যমে যা লিখেছেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। এ ধরনের পোস্ট দলের শৃঙ্খলাবিরোধী।
বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘সোমবার তৃণমূলের মহাসচিব শহরে মিছিল ও পথসভা করবেন। শুভেন্দুদা তো পর্যবেক্ষক আছেনই। তার সঙ্গে পার্থদাও সহ-দায়িত্বে এসেছেন। এসব নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো অর্থহীন।’’