তৃণমূলের এক ব্লক যুব সভাপতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নার্সিংহোমে। ‘রেফার’ হয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। শুক্রবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় হরেন মাহাতো (৩৭) নামে ওই যুব নেতার। এরপরই হাসপাতা়লের সুপারকে ফোন করলেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
সুপার মলয় আদক বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী ফোন করে আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত মজুত রয়েছে কিনা। হাসপাতালে পর্যাপ্ত রক্ত রয়েছে। সে কথা শিক্ষামন্ত্রীকে তথ্য সহ জানিয়ে দিয়েছি।’’ মৃতের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে মৃতের ভাই বরেণ জানান, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায় অবিলম্বে দাদাকে রক্ত দিতে হবে। কিন্তু ঝাড়গ্রাম ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রয়োজনীয় রক্ত মজুত না থাকায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ দাদাকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। রাত তিনটে নাগাদ জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে দাদাকে ভর্তি করানো হয়। বরেণের কথায়, ‘‘নার্সিংহোমে রক্ত দেওয়ার কথা বললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রক্ত দেওয়ার বিষয়ে কিছুই বলেননি।’’ এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ হরেনের মৃত্যু হয়।
বেলিয়াবেড়া ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি হরেনের বাড়ি নাদনগেড়িয়ায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দলের লোকজন ও পরিজনরা হরেনকে রাতে ঝাড়গ্রাম শহরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে সুপার স্পেশ্যালিটিতে। মৃত্যুর খবর পেয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা হাজির হন। হরেনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে কি চিকিৎসায় অবহেলা ছিল? সুপার বলেন, ‘‘কেউ মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ করেননি। রোগীকে চিকিৎসা করার জন্য অল্প সময় পাওয়া গিয়েছিল। কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেননি।’’ তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার বলেন, ‘‘আমি নিজে চিকিৎসক। রোগীকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দেখেন, তার পরে ওয়ার্ডে দেওয়ার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখেন। কী হয়েছিল খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
গরম কালে রক্তের চাহিদা বাড়ে। ভোটের সময় রক্তদান শিবিরও কমে যায়। হাসপাতালের দাবি, পর্যাপ্ত রক্ত মজুত তো ছিলই পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে রোগীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, পাছে ভুল বার্তা যায়, তাই অভিযোগ হয়নি। তৃণমূলের ওই মহল এটাও মানছেন, হরেন অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া দাওয়া করতেন। তিনি ছিলেন নাদনগেড়িয়া টুসু মন্দির উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক। ওই কমিটির চেয়ারম্যান লক্ষ্মণ রায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে চার ঘণ্টারও বেশি ভর্তি থেকেও চিকিৎসাই পাননি। এটা খুবই বেদনার।’’