জট কাটবে কি জামবনিতে! আজ, মঙ্গলবার জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু কে হবেন সভাপতি তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় রবিবার কলকাতায় নিজের বাড়িতে ঝাড়গ্রাম জেলার কয়েকটি ব্লকের নেতৃত্ব এবং পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত দলীয় সদস্যদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতি কারা হবেন, সেটা ঠিক করার জন্য ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত ১৪ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে ১১ জন সদস্য ওই সভায় যাননি। জামবনি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নিশীথ মাহাতো রবিবারই পার্থবাবুর কাছে অভিযোগ করেছেন, দলেরই এক গোষ্ঠী কয়েকজন নির্বাচিত সদস্যকে আটকে রেখেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার ফের পার্থ দলের দুই গোষ্ঠীর নেতা এবং জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সমস্ত সদস্যদের তলব করেন। দলের জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা যদিও বলেন, ‘‘আমরা রাতে মহাসচিবের কাছে যাচ্ছি। আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা মিটে যাবে। পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনে কোনও জট থাকবে না।’’
জামবনিতে শাসক দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমীকরণে একদিকে রয়েছেন নিহত চন্দন ষড়ঙ্গী ঘনিষ্ঠ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নিশীথ মাহাতো ও জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা।
অন্য দিকে রয়েছেন তৃণমূলের এসটি সেলের জেলা সভাপতি অর্জুন হাঁসদা ও জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি সমীর ধল। এখানে পঞ্চায়েত সমিতির ২০ টি আসনের মধ্যে ১৪ টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূলের প্রার্থীরা। ৫টি আসন পেয়েছে বিজেপি। একটি আসন পেয়েছে সিপিএম। দেবনাথ-নিশীথ গোষ্ঠী চাইছেন পম্পা শীটকে সভাপতি করতে। অর্জুন-সমীর গোষ্ঠী পুতুল শীটকে সভাপতি করতে চাইছেন। জামবনি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বলছেন, “নির্বাচিত সদস্যদের মহাসচিবের বৈঠকে যেতে দেওয়া হয়নি। পুরো বিষয়টি মহাসচিবকে জানিয়েছি।” আর তৃণমূলের এসটি সেলের জেলা সভাপতির কথায়, “কেন সদস্যদের আটকাতে যাব। নির্বাচিত সদস্যরা অপহৃত হওয়ার ভয়ে যাননি। পঞ্চায়েত সমিতিতেও ওরা বিজেপির সমর্থন নিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি করতে চাইছেন। আমরা এটা হতে দেব না।”
গত রবিরার পার্থবাবুর বাড়িতে বৈঠকে ঝাড়গ্রাম জেলার আটটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে চারটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ সভাপতির নাম ঠিক করা হয়। ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি রেখা সরেনকে ফের সভাপতি করা হচ্ছে। সহসভাপতি হচ্ছেন সুবোধ টুডু।
এ ছাড়া নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্চিতা ঘোষ এবং সহসভাপতি তরণীকান্ত রাউত, গোপীবল্লভপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিমসাগর সিংহ ও সহসভাপতি কালীপদ সুর, বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাহালা হাঁসদা এবং সহসভাপতি অনুশ্রী কর হবেন বলে ঠিক করা হয়েছে।
গোপীবল্লভপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যার অনুপাতে বোর্ড গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির ২১ টি আসনের মধ্যে ১১ টি বিজেপি ও তৃণমূল ১০টি আসন পেয়েছে। ফলে ওই পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড দখলের ব্যাপারে আশাবাদী শাসকদল।