বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমাল ছাড়া ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভাতেই ভোট মিটিল নির্বিঘ্নে। ভোটের আগের দিন পর্যন্ত শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগে সরব ছিল বিরোধী দলগুলি। বিরোধী দলের সমর্থক ভোটারদের ভোট দিতে না বেরনোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটের দিনও বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগতরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে। শাসক দল পরিকল্পিত ভাবে ভোটারদের বেরতে না দিয়ে নীরব সন্ত্রাসের ছক কষেছিল। শাসকদলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে দুপুরের পর থেকে একাধিক বুথে পুলিশের সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলায় বড় গণ্ডগোল এড়ানো গিয়েছে। প্রত্যেকে নিজেদের ভোটও দিতে পেরেছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, শনিবার ভূমিকম্প ও বৃষ্টির জেরে দুপুরে বুথগুলিতে ভোটারদের ভিড় কিছুটা কম ছিল। তবে দিনের শেষে দেখা যায়, ঘাটাল মহকুমার প্রতিটি পুরসভাতেই আশি শতাংশের উপর ভোট পড়েছে। এ বার ঘাটাল পুরসভায় ৮১.৪ শতাংশ, রামজীবনপুরে ৯০.৫ শতাংশ, খড়ারে ৮৩.৮ শতাংশ, ক্ষীরপাই পুরসভায় ৮৮.৭ শতাংশ ও চন্দ্রকোনায় ৯১.৬ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ঘাটালের মহকুমাশাসক তথা রির্টানিং অফিসার রাজনবীর সিংহ কাপুর বলেন, “পুরভোটে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগও আসেনি।’’ এ বিষয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, ‘‘ভোটের আগে বিরোধীরা অপপ্রচার চালাচ্ছিল। শনিবার নির্বিঘ্নে ভোট সম্পন্ন হওয়ায় তা প্রমাণিত হল।’’
ভোটের হার বেশি হওয়ায় ভাল ফল নিয়ে আশাবাদী বিরোধী দলগুলি। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা বলেন, “ভোট সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনও ভাল কাজ করেছে। শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বুথ দখলের চেষ্টা করলে দলের কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ফলে তাদের চেষ্টা বিফলে যায়।’’ অশোকবাবুর দাবি, এ বার ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন পুরসভায় আশি শতাংশের উপর ভোট পড়ায় দল ভাল ফল করবে। রামজীবনপুরে তাদের জয় নিশ্চিত। ঘাটাল পুরসভারও অধিকাংশ ওয়ার্ডে তারা জিতবেন। ভাল ভোট হয়েছে বলেই এতটা আশা করতে পারছি। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ সিপিএমের সঙ্গেই রয়েছে। কারণ, তৃণমূলকে এখন মানুষ আর পছন্দ করে না।’’
যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বিরোধী ভোট কতটা ভাগাভাগি হবে, তার উপরই বামেদের ফল নির্ভর করবে। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভোট নির্বিঘ্নেই হয়েছে। দু’একটি ওয়ার্ডে বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল হলেও মানুষই তা প্রতিরোধ করেছেন।’’ ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপি ভাল ফল করবে বলেও দাবি তুষারবাবুর। যদিও ঘাটালের তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের দাবি, ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভাই দলের দখলে যাবে। একাধিক পুরসভা বিরোধী শূন্যও হবে।