স্বজনদের সঙ্গে বৃদ্ধ বনমালী মাইতি। রবিবার এগরা থানায়। নিজস্ব চিত্র
পুজোর ছুটি কাটাতে সপরিবারে দিঘা ঘুরতে এসে হোটেল থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ। মাইকে প্রচার করেও বৃদ্ধের খোঁজ পায়নি পুলিশ, হদিস পায়নি পরিবারও। শেষ পর্যন্ত এগরা থানার পুলিশ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বৃদ্ধকে উদ্ধার করে চিকিৎসার পরে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল। খুশি বৃদ্ধের পরিবার।
কলকাতার উল্টোডাঙা থানার উজির চৌধুরী রোডের মাইতি পরিবার পুজোর ছুটিতে ষষ্ঠীতে দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন। সঙ্গে এসেছিলেন মাইতি পরিবারের প্রবীণ সদস্য বছর সাতষট্টির বনমালী মাইতি। নিউ দিঘার একটি হোটেলে তাঁরা উঠেছিলেন। ষষ্ঠীর দুপুরে বৃদ্ধ হোটেল থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। পরিবারের লোকেরা দিঘা ও আশপাশের এলাকায় মাইকিং করে খোঁজাখুজি করলেও বৃদ্ধের সন্ধান পায়নি। পরে দিঘা থানায় নিখোঁজ অভিযোগ করেন বৃদ্ধের ছেলে শ্যামল মাইতি।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্মৃতিশক্তি বিভ্রাটের কারণে বৃদ্ধ দিঘায় বাস ধরে এগরার দিকে চলে আসেন। সপ্তমীর রাতে এগরা থানায় খবর আসে অজ্ঞাত পরিচয় এক বৃদ্ধ সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এগরা-কাঁথি রাজ্যে সড়কে দোঁবাধি বাজার এলাকায় পড়ে রয়েছেন। সিভিক ভলান্টিয়াররা বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন। পরে এগরার থানার পুলিশ গিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। সুস্থ হওয়ার পর গত শনিবার এগরা থানার পুলিশ বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর নাম ও বাড়ির ঠিকানা জানতে পারে। এর পর এগরা থানার পুলিশ বৃদ্ধের ছবি-সহ উল্টোডাঙা থানায় খবর পাঠায়। সেখান থেকে বৃদ্ধের পরিবার এগরা থানায় যোগাযোগ করেন। রবিবার এগরা থানার পুলিশ ছেলে শ্যামলবাবুর হাতে বৃদ্ধ বাবাকে তুলে দেয়। লক্ষ্মীপুজোর দিন বাবাকে ফিরে পেয়ে এদিন আনন্দে কেঁদে ফেলেন ছেলে। বৃদ্ধের ছেলে শ্যামল মাইতি জানান 'ছুটিতে দিঘায় আনন্দ করতে এসে বাবাকে হারিয়ে গোটা পরিবার দিশেহারা হয়ে যায়। হাজার চেষ্টা করেও সেদিন বাবাকে খুঁজে পাইনি। চাপা যন্ত্রণা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাই। এগরা থানার পুলিশের সহযোগিতায় বাবাকে ফেরে পেয়ে ভীষণ খুশি। আনন্দে চেপে রাখতে পারছি না'।
এগরা থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গাপুজোর সপ্তমীর রাতে খবর পেয়ে আহত অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হতেই আজ তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।