দীক্ষিত দম্পতি। নিজস্ব চিত্র।
আবেদন জানিয়েছিলেন পঞ্চায়েতে। গিয়েছিলেন ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে, বিডিও’র কাছেও। এত দুয়ার ঘুরেও বার্ধক্য ভাতা মেলেনি নন্দকুমারের বাসুদেবপুরের গ্রামের আশি ঊর্ধ্ব দম্পতি কানাই এবং সাবিত্রী দীক্ষিতের।
কানাইয়ের বয়স ৮৯ বছর। সাবিত্রী ৮২ বছরে পড়েছেন। বাড়িতে একাই থাকেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রের খবর, কানাই আগে রান্নার কাজ করতেন। বয়সের ভারে প্রায় সাত-আট বছর আর কাজ করতে পারেননা তিনি। জমিজমাও নেই। গ্রামে ছোট্ট একটি বাড়িতে তাঁরা বাস করেন। দম্পতির দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মহিষাদলের গোপালপুর গ্রাম থাকে মেয়ে-জামাই। তাঁরা মাঝে মধ্যে দেখাশোনা করতে আসেন। কিন্তু তাঁরাও আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল নন। ফলে বৃদ্ধ দম্পতির দেখাশোনা করতে হিমসিম খান। তাই সরকারি বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার আশা করেছিলেন দীক্ষিত দম্পতি।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৬০ বছরের ঊর্ধ্ব গরীব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মাসিক বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই বৃদ্ধ দম্পতি জানাচ্ছেন, বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার জন্য আগে গ্রামপঞ্চায়েতের কাছে আবেদন করেছিলেন। গত বছর রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতেও আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভাতার উপভোক্তা তালিকায় তাঁদের স্থান হয়নি বলে অভিযোগ। কানাই বলেন, ‘‘গত সাত-আট বছর আর কাজ করতে পারি না। তাই সরকারি বার্ধক্য ভাতার জন্য পঞ্চায়েতে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও বার্ধক্যভাতা মেলেনি। বিডিওর কাছে আমার সমস্যার কথা জানিয়েছি।’’ বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মেয়ে চম্পাবতী পণ্ডা বলছেন, ‘‘আমাদের আর্থিক অবস্থাও খারাপ। বাবা-মার বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার খুবই দরকার।’’
ওই দম্পতির বার্ধক্য ভাতা মিলছে না কেন?
বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের প্রধান মঞ্জু বক্সী বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধ দম্পতির আবেদন পাওয়ার পরেই তা অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ওই দম্পতি ছাড়াও এলাকার আরও কয়েকজনের আবেদন জমা রয়েছে। সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছি।’’ আর নন্দকুমারের বিডিও শানু বক্সী বলছেন, ‘‘ওই বৃদ্ধ দম্পতি আমার সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তবে বার্ধক্য ভাতার জন্য আমার কাছে আগে আবেদন জানাননি। এই মুহূর্তে বার্ধক্য ভাতার প্রাপক হিসাবে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে ওই দম্পতিকে বার্ধক্য ভাতা তালিকায় উপভোক্তা হিসেবে যুক্ত করা যাবে।’’