চলছে ইডির তল্লাশি অভিযান। ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা এলাকার সরকারি আবাসনে। মঙ্গলবার দুপুরে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
ঝাড়গ্রাম জেলায় এই প্রথম তল্লাশিতে এলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকরা। তাও আবার লোকসভা ভোটের আগে। এই নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে জেলা রাজনীতিতে।
সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম শহরে ইডি আসার পরে তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই তাদের গতিবিধির খোঁজখবর নিয়েছেন। জেনেছেন তারা কোথায় যাচ্ছে, কীসের তদন্তে এসেছে। তৃণমূলের কয়েকজন নাকি এদিন ভয়ে কার্যত আত্মগোপনও করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এক সময়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, বর্তমানে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। উল্লেখ্য, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পরে ঝাড়গ্রাম জেলার কয়েকজন তৃণমূল নেতার উপরে নজর পড়েছিল ইডির। কারণ এই জেলায় পার্থ ঘনিষ্ঠের সংখ্যা কম ছিল না। পার্থের সুপারিশে অনেকে চাকরি পেয়েছিলেন বলেও খবর। নাম না প্রকাশ করার শর্তে জেলা তৃণমূলের এক নেতা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এদিন কয়েকজন নেতা-জনপ্রতিনিধি ভয়ে কারও ফোন ধরছেন না। লুকিয়ে রয়েছেন। দুর্নীতি করেছে বলেই ভয় রয়েছে।’’ তৃণমূলের আরেক প্রবীণ নেতা বলছেন, ‘‘পার্টিতে এসে কেউ যদি রোজগারের রাস্তা তৈরি করে, পাকা বাড়ি-গাড়ি করে তাহলে তো তাঁদের ভয় থাকবেই।’’ তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো অবশ্য বলেন, ‘‘দলের কেউ লুকিয়েছে বলে আমার কাছে খবর নেই। নেতারা ভয় কেন পাবে? ওরা (ইডি) ওদের কাজ করবে। ভোট আসছে বলেই বিজেপি ইডি ও সিবিআই দিয়ে এসব করছে।’’
ইডি আসার খবরে ওই সরকারি আবাসনের সামনে জটলা তৈরি হয়। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েরজন বিজেপির নেতা-কর্মীও ছিলেন। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘ইডি ও সিবিআই এখন জেলা ও ব্লক স্তরে তদন্তে আসছেন। তৃণমূলের বহু নেতা-কর্মী দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তবে যাঁরা দুর্নীতি করেননি তাঁদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁরা যে গর্তেই লুকিয়ে থাকুন সবাইকে ধরবে।’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু ফোন ধরেননি। বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘আমরা গোড়া থেকেই বলছি, বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। নানা ভাবে তৃণমূলের লোকজনকে ফাঁসানো হচ্ছে। তবে আগামী লোকসভা ভোটে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এর জবাব দেব।’’
ইডি এসে ফিরে েগলেও ঝাড়গ্রাম জেলা রাজনীতিতে তার আঁচ যে আপাতত থাকছে তা বলাই যায়।