প্রতীকী চিত্র
‘দিদিকে খোলা চিঠি’! চিঠি অবশ্য নয়, চিরকুট বলা চলে। দিন চারেক ধরে সেই চিরকুট ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায়। জেলা তৃণমূলের চার নেতা-নেত্রীকে চিরকুটে ‘চার ডাকাত’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে। চিরকুট কারা দিয়েছে, সেটা অবশ্য লেখা হয়নি। ‘দিদিকে খোলা চিঠি’ শিরোনামে ওই চিরকুটের বয়ান, ‘দিদি, জঙ্গলমহল আপনার দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে। এই চার ডাকাত (দুলাল মুর্মু, বিরবাহা সরেন, উজ্জ্বল দত্ত, অজিত মাহাতো) কোটি কোটি টাকা কাটমানি খেয়ে দলকে ডোবাচ্ছে। যদি ২০২১-এ জঙ্গলমহলে ফিরতে চান, তাহলে আইবি রিপোর্টের সাহায্য নিন’। এমন চিরকুট ছড়িয়ে পড়ায় অস্বস্তি শুরু হয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। কারণ, যাঁদের চার ডাকাত বলে চিরকুটে উল্লেখ করা হয়েছে তাঁরা জেলা তৃণমূলের চার গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রী। দুলাল জেলা তৃণমূলের সভাপতি, বিরবাহা সরেন জেলা চেয়ারম্যান। উজ্জ্বল আর অজিত জেলা তৃণমূলের দুই কো-অর্ডিনেটর।
চার নেতা-নেত্রীরই দাবি, ‘‘নিদিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য নিয়ে জনসমক্ষে হেয় করার জন্য কুৎসা করা হচ্ছে। কারা করেছে পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক। বিরোধীদেরও হাত থাকতে পারে।’’ সম্প্রতি তৃণমূলের পদাধিকারীদের প্রাথমিক তালিকা ফাঁস হওয়ার পরে শাসকদলের বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। পদ হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন কিছু নেতা-নেত্রী। আবার যাঁদের নাম প্রাথমিক তালিকায় রয়েছে, তাঁদের কেউ না কেউ এই চার নেতা-নেত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ফলে, তালিকা অনুযায়ী বিদায়ী ও পদ না পাওয়াদের ক্ষোভেই এই চিরকুট কি-না খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা বিভাগ। দুলাল অবশ্য বলছেন, ‘‘তৃণমূলের জয়যাত্রায় শঙ্কিত বিরোধী শিবির কুৎসা শুরু করেছে।’’
মুখে যে যাই বলুন, চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে আইবি রিপোর্টের সাহায্য নিতে বলায় অস্বস্তিতে রয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। কারণ, বালিভাসা টোল প্লাজায় অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ, ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে রোগীদের খাবার সরবরাহ থেকে নানা ধরনের অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে জেলা নেতৃত্বের একাংশের নাম জড়িয়েছে। সম্প্রতি টোল প্লাজা সম্পর্কিত একটি ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। সব মিলিয়ে জেলা তৃণমূলের অস্বস্তির পারদ বাড়ছে!