হলদিয়ার একটি শপিং মলে থার্মাল স্ক্রিনিং। নিজস্ব চিত্র
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী সোমবার থেকে খোলার কথা ছিল বেসরকারি শপিং মল এবং রেস্তরাঁর। জেলা কথা রাজ্যের অন্যতম শিল্পশহর হলদিয়ায় একাধিক মল এবং বেশ কয়েকটি নামীদামি রেস্তরাঁ রয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী মল খোলা হলেও, বন্ধই থাকল বেশিরভাগ রেস্তরাঁ।
হলদিয়ার বেসরকারি একটি মলে আগে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ ভিড় করতেন। দীর্ঘ লকডাউনের পর সোমবার দিনভর মল খোলা থাকলেও সেখানে মানুষের তেমন আনাগোনা নজরে পড়েনি। যদিও সরকারি নির্দেশিকা মেনেই করোনা সতর্কতায় মল কর্তৃপক্ষ মলে আগতদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছেন। সেই সঙ্গে মলে ঢুকতে গেলে প্রত্যেকের মোবাইলে ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ আছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে। মল কর্তৃপক্ষের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, লিফটে ৪ জনের বেশি ওঠা নামা করা যাবে না। লিফটে অটো স্যানিটাজ়েশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সাধারণ মানুষ যাতে চলাফেরার সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেন সে জন্য বিভিন্ন চিহ্ন দিয়ে নির্দেশিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মলের প্রত্যেকটি দোকানে যাতে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব থাকে সে ব্যাপারে দোকানগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন মল কর্তৃপক্ষ। মলে ১০ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে নগদ লেনদেন না করতে। যত বেশি সম্ভব ডিজিটাল লেনদেন করতে। একান্তই প্রয়োজন হলে নগদ লেনদেন।
হলদিয়ার বাসিন্দা সঞ্জু দাস বলেন, ‘‘সরকারের তরফে লকডাউন তুলে দিলেও মনে করোনা আতঙ্ক রয়েছে কারণ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই মল খুললেও সেখানে যাওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই।’’ একটি বেসরকারি মলের পক্ষ থেকে পার্থ দেবদাস বলেন, ‘‘মলের বেশিরভাগ দোকান খোলা হয়েছে। সরকারি বিধি নিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হচ্ছে। ’’
এ দিন দেখা গেল, কাঁথি শহরের একটি বেসরকারি শপিং মলে ঢোকার মুখে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে চেক করার পাশাপাশি হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। একই ছবি দেখা গেছে শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আরও দুটি বেসরকারি শপিংমলে। তবে গত কয়েকদিন ধরে এই তিনটি শপিংমল চালু থাকলেও, ক্রেতাদের ভিড় সেরকম নেই বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের।
হলদিয়ার বেশিরভাগ রেস্তরাঁ এখনও খোলা হয়নি। একটি রেস্তোঁরার মালিক রাজু শেখ বলেন, ‘‘আসলে উপযুক্ত বিধি মেনে কী ভাবে করোনার মোকাবিলা করা যাবে রেস্তোঁরায় তা আমরা এখনও ভেবে ঠিক করে উঠতে পারিনি।’’ ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে কোলাঘাট থেকে মেচগ্রাম পর্যন্ত মোট ৪২টি রেস্তোঁরা রয়েছে। এদিন সমস্ত রেস্তরাঁই খুলে যায়। তবে ভিড় দেখা যায়নি। প্রতিটি রেস্তরাঁয় ঢোকার মুখে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার। তবে এদিন রেস্তরাঁগুলিতে রান্না করা খাবার বিক্রি হয়নি বললেই চলে। কোলাঘাট হাইওয়ে হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাজকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘কোলাঘাটের সমস্ত রেস্তরাঁই খুলেছে। তবে ভিড় নজরে পড়েনি। আশা করছি ধীরে ধীরে ভিড় হবে।’’