শুধু ব্লক সভাপতির পদ নয়, তৃণমূল দলটাই ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লালগড়ের সত্তরোর্ধ্ব বনবিহারী রায়।
এক সময় কংগ্রেস করতেন বনবিহারীবাবু। দলের জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গোড়া থেকেই লালগড়ের ব্লক সভাপতি। কিন্তু বুধবার তপসিয়ার তৃণমূল ভবন থেকে বেরিয়ে ৭৩ বছরের বনবিহারীবাবু বললেন, ‘‘দুর্নীতির প্রমাণ মেলায় চার জনকে অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। জেলা নেতৃত্বের অনুমোদনও ছিল। এখন রাজ্য নেতৃত্ব তাঁদের পুনর্বহাল করতে বলছেন। আমার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার পদত্যাগপত্র পাঠব।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার ধরমপুরে লালগড়ের ব্লক সম্মেলনে চার অঞ্চল সভাপতিকে সরিয়ে নিজের অনুগামীদের বসিয়েছিলেন বনবিহারীবাবু। অপসারিত চারজন দলে বনবিহারীর বিরোধী বলে পরিচিত তন্ময় রায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। তন্ময় লালগড়েরই যুব তৃণমূল সভাপতি। দলীয় রাজনীতিতে বনবিহারী-তন্ময়ের বিরোধ দীর্ঘদিনের। রবিবারের ওই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি এবং রাজ্যের মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো ওই চার জন অঞ্চল সভাপতিকে চিঠি দিয়ে পুনর্বহালের কথা জানান। তার প্রতিবাদেই এ দিন রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেন বনবিহারীবাবু।
বনবিহারীবাবুর কথায়, ‘‘সুব্রত বক্সী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা না মানলে দল থেকে সরে যেতে হবে। জানিয়েছি, আমি সরে যাচ্ছি।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো বলেন, ‘‘কিছুতেই বোঝাতে পারছি না যে এক সঙ্গে চার জনকে সরালে ভুল বার্তা যাবে। আমি এক-দু’জনকে সরাতে বলেছিলাম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বনবিহারী বহু দিন দল করছেন। উনি যাতে পদত্যাগ না করেন সে ব্যাপারে কথা বলব।’’ তন্ময় রায়ও বলছেন, ‘‘বনবিহারীবাবু বর্ষীয়ান নেতা। উনি পদত্যাগ যাতে না করেন, বোঝানোর চেষ্টা করব।’’
তবে বনবিহারী রায় অনড়। বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের বেশি বাকি নেই। টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত কয়েকজন লোককে টিকিট দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমি থাকলে সেটা হত না। পরিকল্পনা করেই এত কাণ্ড ঘটানো হল।’’