সাঁতার: পুকুরের ঘোলা জলেই নেমেছে দুই কিশোর। নিজস্ব চিত্র
পুরসভা গঠনের পর ১৫ বছর কেটে গিয়েছে। যদিও আজও পাঁশকুড়ায় গড়ে ওঠেনি কোনও সুইমিং পুল। ছেলেমেয়েদের সাঁতার শেখাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন অভিভাবকরা।
পাঁশকুড়া শহরে পুকুর যে নেই তা নয়। শহরের ব্লক অফিসের কাছে, ব্রাডলি হাইস্কুল চত্বরে পুকুর রয়েছে। আছে নারায়ণদিঘি ও সুলতানদিঘির মতো কয়েকটি বড় বড় জলাশয়ও। যদিও শহরে সাঁতার শেখার জন্য এখনও কোন সুইমিং পুল গড়ে ওঠেনি। অধিকাংশ জলাশয়ের জল আবর্জনায় পরিপূর্ণ। দূষণে সেই সব পুকুরে সাঁতার কাটা দায় বলে অভিযোগ।
সাঁতার শিখতে হলে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে কোলাঘাট শহর বা ৩০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর তমলুক শহরের সুইমিং পুলে যেতে হয়। শহরের নারান্দা এলাকার বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক মানসকুমার দাস বলেন, ‘‘শহরে সুইমিং পুল না থাকায় আমার দুই মেয়ে কেউ সাঁতার শিখতে পারেনি। সুইমিং পুল গড়ার জন্য পুরসভা ও প্রশাসন উদ্যোগী হলে ভাল হয়।’’ শহরের দক্ষিণ গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা অমল সেন বলেন, ‘‘জলাশয়ে নিরাপদে স্নান করা, আত্মরক্ষার জন্য শিশুদের সাঁতার শেখা খুব প্রয়োজনীয়। কিন্তু শহরে সাঁতার শেখার জন্য কোনও সুইমিং পুল না থাকায় মেয়েকে সাঁতার শেখাতে পারছি না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘শহরের জলাশয়গুলির জল দূষিত হওয়ার কারণে সেখানে সাঁতার শেখানো কার্যত অসম্ভব। ব্লক অফিসের কাছে থাকা জলাশয়ে সুইমিং পুল হলে ভাল হয়।’’
পাঁশকুড়ার পুরাতন বাজার ও স্টেশন বাজার-সহ সংলগ্ন বেশ কিছু গ্রাম নিয়ে ২০০২ সালে পাঁশকুড়া পুরসভা গঠন করা হয়। ১৮টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট পাঁশকুড়া শহরে বর্তমানে প্রায় ৭০ হাজার লোক বসবাস করেন। শহরের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এতদিন হল পাঁশকুড়া পুরসভা হয়েছে। অথচ এখানে কোনও সুইমিং পুল নেই, এটা খুব আশ্চর্যের।’’ পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুজিত রায় বলেন, ‘‘ছেলে-মেয়েদের সাঁতার শেখার জন্য ব্লক অফিসের কাছে জলাশয়ে সুইমিং পুল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’’
শহরে খুদেদের সাঁতার শেখার জন্য সুইমিং পুলের প্রয়োজনীয়তার কথা মানছেন পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান। তিনি বলছেন, ‘‘ছেলে-মেয়েদের সাঁতারের প্রশিক্ষণের জন্য সুইমিং পুল তৈরির জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রিন সিটি প্রকল্পে পুরসভা অফিসের কাছের জলাশয়কে সুইমিংপুল হিসেবে গড়ে তোলার স্কিম জমা দেওয়া হয়েছে।’’