শালবনিতে পড়ে রয়েছে শুখা জমি। — নিজস্ব চিত্র
সেচের উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় বিপাকে পড়েছেন বাঁকিবাধ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষকেরা। এমনকী বর্ষাতেও ভারী বৃষ্টি না হলে পতিত পড়ে থাকে জমি। মাঝেমধ্যে দু’-একটি গভীর নলকূপ থাকায় অবশ্য কিছু জমিতে চাষ হয়।
শালবনি এলাকার বাকিবাঁধ পঞ্চায়েত এলাকায় সেচের সমস্যা দীর্ঘদিনের। অথচ এই জমিতে ধান, আলু ও সব্জি চাষ করা সম্ভব। অথচ সেচের অভাবে জমি নিষ্ফলা হয়ে পড়ে থাকে বড়বাকড়ি, তিলডাঙা, বাঁকিবাঁধ, কমলা প্রভৃতি এলাকায়। বড়বাকড়ির আশিস মাহাতোর কথায়, ‘‘বিঘা তিনেক জমিতে চাষ করতে পারলেও বৃষ্টি কম হলে দুই বিঘা জমিতে চাষ করতে পারি না। এ বার বর্ষায় বৃষ্টি তেমন হয়নি। তাই আমার মতো অনেকেই চাষ করতে পারেননি।’’ এলাকায় সেচের সমস্যার কথা মানছেন শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘এ ব্যাপারে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করেছি। ওই এলাকার জলাধার তৈরির জন্য জমি পাচ্ছি না। ফলে ওখানে সেচের ব্যবস্থা করতে হলে অগভীর নলকূপই একমাত্র ভরসা। কিছু ক্ষেত্রে নলকূপ করায় কিছু জমিতে চাষ হচ্ছে। আরও কিছু নলকূপ তৈরির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’
বহু দিন ধরেই এই এলাকায় সেচের উন্নয়নের কথা বলে আসছে সরকার। দু’-একটি অগভীর নলকূপ তৈরিও হয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে তো বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ সম্ভব নয়। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, একটি অগভীর নলকূপে ৩৫-৪০ বিঘে জমির চাষ করা যায়। আবহাওয়া নরম থাকলে বড়জোর ৫০ বিঘেতে চাষ করা যায়। এক একটি এলাকায় ন্যুনতম ৫০০-৭০০ বিঘে জমি থাকে। সেখানে দু’-একটি অগভীর নলকূপে কী হবে! চাষিদের মতে, সেচের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হলে হয় বড় জলাশয় তৈরি করতে হবে নতুবা ৪০০-৫০০ মিটার অন্তর একটি করে অগভীর নলকূপ তৈরি করতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দা নিরঞ্জন মাহাতোর কথায়, ‘‘সেচের ব্যবস্থা থাকলে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা— তিনবার চাষ করতে পারতাম। বারবার পঞ্চায়েতকে জানিয়েও কিছু কাজ হয়নি।’’ এ বার অবশ্য সেচের উন্নয়নে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। কতদিনে পতিত জমি শস্যশ্যামলা হয় সেই অপেক্ষাতেই বাঁকিবাঁধ।