ডুবে গিয়েছে ধানখেত। কেশপুরের পঞ্চমীতে (বাঁ দিকে)। নৌকাতেই চলছে রান্না। ঘাটালের অজবনগরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল ও কৌশিক সাঁতরা
পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। এখনও ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন প্রায় ৩৭ হাজার দুর্গত মানুষ। বৃষ্টি হয়েছে বৃহস্পতিবারও। জলমগ্ন হয়ে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপুল চাষের জমিও জলের তলায়।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় পদক্ষেপই করা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বিভিন্ন এলাকায় ২২৩টি ত্রাণ শিবির চলছে। শিবিরে রয়েছেন ৩৭,৬৫৬ জন। দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ৭৫৭টি শিবির খুলতে হয়েছিল। ছিলেন ৮০,২৪৭ জন। বৃহস্পতিবার কারও মৃত্যু হয়নি। এখনও পর্যন্ত দুর্যোগে জেলায় মৃতের সংখ্যা ১৬। এরমধ্যে দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন ৭ জন, জলে তলিয়ে মারা গিয়েছেন ৮ জন, বজ্রাঘাতে মারা গিয়েছেন ১ জন। কেশপুরে ১৪টি শিবিরে ৬৫৩ জন রয়েছেন। সবংয়ে ১১৯টি শিবিরে ২৮,১০০ জন রয়েছেন। পিংলায় ৬২টি শিবিরে ৭,২৬০ জন, নারায়ণগড়ে ৫টি শিবিরে ৪৫০ জন, ডেবরায় ১৪টি শিবিরে ৬১৫ জন রয়েছেন। ঘাটালে ২টি শিবিরে ৩১১ জন রয়েছেন। এদিন মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া, চাঁদড়ার জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া। ছিলেন বিডিও (সদর) সুদেষ্ণা দে মৈত্র।
জেলার বেশ কয়েকটি এলাকার জল-পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। কংসাবতীর জল অবশ্য চূড়ান্ত বিপদসীমার নীচেই রয়েছে। কাল, শনিবার থেকে ফের বৃষ্টি, দুর্যোগ হতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশিরভাগ জায়গা থেকেই দ্রুত জল নেমে যাচ্ছে। বৃষ্টি থেমে গেলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’ তবে বৃষ্টি চলতে থাকলে নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা স্থানীয়দের। প্রশাসন জানিয়েছে, বাঁধের উপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।
ফের তো দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে? জেলাশাসক বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের জেলা না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাবার এবং ত্রিপল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এগিয়ে এসেছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।