হিজলিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধনে বনমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
হাতির হানায় ক্রমশ বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি। উত্তরবঙ্গ এবং ঝাড়গ্রাম সফরে গিয়ে এ বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল বেশ বনকর্তাদের একাংশ এই ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ঝাড়খণ্ড সীমানায় পাওয়ার ‘ফেনসিং’ করে হাতি আটকানোর পরিকল্পনা করছেন। মঙ্গলবার বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। বরং গাঁধীগিরিতে পড়শি রাজ্যের বোধদয় ঘটাতে চাইছে রাজ্য সরকার।
এ দিন খড়্গপুরের হিজলিতে নবনির্মিত ‘স্টেট ফরেস্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে’ প্রশিক্ষণের সূচনা করেন মন্ত্রী। এটি দক্ষিণবঙ্গের প্রথম কেন্দ্র, যেখানে বন দফতরের সমস্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। থাকবে হাতি নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও। ৪২ একর জমিতে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে তৈরি এই কেন্দ্রে ডেপুটি রেঞ্জার ও বিট অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগে কার্শিয়াংয়ের দাউহিলে এই কেন্দ্র ছিল। এ দিন ১০৬তম ব্যাচের ৩৪জন বন আধিকারিক ছ’মাসের প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। ২০১৩ সালের এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওই অনুষ্ঠানেই মন্ত্রী বলেন, “আমরা এ রাজ্যের কোথাও হাতির করিডর বন্ধ করতে চাই না। ওড়িশা ও নেপাল তাঁদের করিডর বন্ধ করেছে। তাতে আমাদের রাজ্যে হাতির হানায় ফসল ও মানুষেরও ক্ষতির বহর বেড়েছে। কিন্তু আমরা চাই আমাদের দেখে ওড়িশা ও নেপালের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।”
আটের দশকের পর থেকেই ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে হাতির আগমন বাড়ছে জঙ্গলমহলের জেলাগুলোতে। বছর দু’য়েক আগে ওড়িশা তাঁদের করিডর বন্ধ করে দেয়। ফলে স্বাভাবিক গতিপথে বাধা পাওয়া হাতিরা তাণ্ডব চালাচ্ছে এ রাজ্যে। এখন দলমা থেকে প্রায় ১৫০টি হাতি এই রাজ্যে ঢুকছে বলেই হিসাব দিয়েছেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে প্রায় ৩৫-৪০টি রেসিডেন্সিয়াল হাতি সারা বছর থাকছে। খাবারের সন্ধানে তারা লোকালয়ে উৎপাত চালচ্ছে। এই অবস্থায় মন্ত্রীকে দায়ী করেছেন পড়শি রাজ্যগুলিকেই। তাঁর দাবি, “শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গে হাতির সমস্যা রয়েছে। ওড়িশা সেচের নাম করে খাল কেটে হাতির করিডর বন্ধ করেছে, নেপাল ও ভুটান পাওয়ার ফেনসিং করে হাতি আটকেছে। আমরা ওড়িশা সরকারের সঙ্গে কথা বলছি। তবে নেপালের সঙ্গে কথা বলার জন্য কেন্দ্রকে জানিয়েছি। সে বিষয়ে রিপোর্ট পাইনি এখনও।” রেলে কাটা পড়ে হাতির মৃত্যু ঠেকাতে রেলের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।