প্রতীকী ছবি।
অতিমারি পরিস্থিতি কাটিয়ে খুলেছে স্কুল। শুরু হয়েছে পঠন-পাঠন। নেওয়া হচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট। তবে সরকারি নির্দেশ মেনে এখনও প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের স্কুল যাওয়া বন্ধ। অনলাইনে ক্লাস চললেও ব্রেইল পদ্ধতিতে যারা পড়াশোনা করে সেই সব দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের সমস্যা হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তিনটি সরকার স্বীকৃত প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে কাঁথি-১ ব্লকের ফরিদপুরে দৃষ্টিহীন এবং মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ও ময়না ব্লকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত, আর সুতাহাটা চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন হাইস্কুলে প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দৃষ্টিহীনদের পড়ানো হয়। এর মধ্যে শুধু চৈতন্যপুর বিবেকানন্দ মিশন স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দৃষ্টিহীনদের ক্লাস শুরু হয়েছে গত ১৬ নভেম্বর থেকে। পঞ্চাশ জন আবাসিক পড়ুয়াকে নিয়ে চলছিল ক্লাস। আপাতত দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির টেস্ট শুরু হয়েছে। তবে স্কুল খোলার পর আবাসিক পড়ুয়াদের করোনা বিধি মেনে আবাসনে ঢোকানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গিয়েছে।
স্কুলে ১৭৪ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তবে প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা অবশ্য এখনও স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এদের অধিকাংশই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা পরিবারের ছেলেমেয়ে। স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট পরিষেবার খরচ বহনে সমস্যা থাকায় বহু পড়ুয়া অনলাইন ক্লাস করতে পারেনি বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিষেক দত্ত বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাস খরচসাপেক্ষ। বহু অভিভাবকের ক্ষেত্রে তা ব্যয়বহুল হওয়ায় যে সব ক্লাসে সরকারের নির্দেশ মেনে পঠন-পাঠন শুরু হয়নি সেই সব ক্লাসের পড়ুয়ারা স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তা ছাড়া অনলাইনে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ানোও ঠিকমতো হয় না।’’
একই ভাবে প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অন্য স্কুল খুলে গেলেও পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ফরিদপুর শিক্ষা নিকেতনের দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা। সেখানেও ২৬ জন পড়ুয়া রয়েছে। সরকারি নির্দেশ মেনে হস্টেল বন্ধ। তাই আবাসিক পড়ুয়ারা বাড়িতেই রয়েছে। স্কুলের পরিচালন কমিটির এক কর্মকর্তা ব্রজগোপাল সাহু বলেন, ‘‘সাধ্যমতো বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনার বিষয়বস্তু ভয়েস রেকর্ডিং করা হয়। তারপর সেই রেকর্ডিং ওই সব পড়ুয়ার পরিবারের কোনও এক সদস্যের মোবাইলে বাজানো হয়। সেই আওয়াজ শুনে শুনে পড়তে হচ্ছে পড়ুয়াদের।’’