মমতার স্পর্শেই না কি পূর্তে নির্মল, জোর জল্পনা দলে

তৃণমূল সূত্রে এমনই খবর। কিন্তু নির্মল কী ভাবে এই পদ পেতে চলেছেন? কার নির্দেশে? কার হস্তক্ষেপে? জল্পনার শেষ নেই শাসক দলের অন্দরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের নতুন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হতে চলেছেন নির্মল ঘোষ। তৃণমূল সূত্রে এমনই খবর। কিন্তু নির্মল কী ভাবে এই পদ পেতে চলেছেন? কার নির্দেশে? কার হস্তক্ষেপে? জল্পনার শেষ নেই শাসক দলের অন্দরে। জেলা তৃণমূলের এক নেতার সরল স্বীকারোক্তি, ‘‘নির্মল হয়তো কল্পনা করেননি যে তিনি এই পদ পাবেন। শুনছি, সবই না কি দিদির আশীর্বাদ।’’

Advertisement

নির্মল বিদায়ী বোর্ডে কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, এ বার মমতার স্পর্শেই পূর্তে নির্মল ছোঁয়া লাগতে চলেছে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, সামনেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন। সম্ভাব্য কর্মাধ্যক্ষদের নাম নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার জেলার চার নেতাকে কলকাতায় তলব করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। সুব্রতবাবু দলের তরফে পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। বৈঠকে জেলার নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, পূর্তে কারও নাম প্রস্তাব করা যাবে না। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হবেন নির্মল ঘোষ। এই সিদ্ধান্ত দলের। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে এ-ও বার্তা দেওয়া হয়, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন রয়েছে। কেউই বিরোধিতা করেননি।

বস্তুত, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দৌড়ে ছিলেনই না নির্মল। বরং এই দৌড়ে ছিলেন রমাপ্রসাদ গিরি। রমাপ্রসাদ যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এ বার জেলা পরিষদে প্রার্থী হন। জেতেনও। তাঁকে পূর্ত স্থায়ী সমিতির সদস্যও করা হয়। দলের অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন যে, এই যুব নেতাই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হবেন। তবে তাতে জল পড়েছে। দলের এক সূত্র মানছে, কে, কোন কর্মাধ্যক্ষ হবেন, তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ ছিল না। । সব থেকে বেশি দাবিদার না কি ছিল পূর্তেই। পদ-প্রত্যাশীরা কলকাতা দৌড়েছেন। বিজয়ার শুভেচ্ছা জানানোর সঙ্গেই দলের ‘দিদি-দাদাদের’ সঙ্গে দেখা করেছেন। কেউ খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়েরই দেখা পেয়েছেন। কেউ সুব্রত বক্সী, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের দেখা পেয়েছেন। দলের ওই সূত্র জানাচ্ছে, কুশল বিনিময়ের পরে পদ-প্রত্যাশীদের আর্জি ছিল মোটের উপর একটাই, ‘একটু দেখবেন!’

Advertisement

দলের এক সূত্রের ধারণা, বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে দলনেত্রীর কাছে গিয়েই না কি ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েছে নির্মলের। তৃণমূলনেত্রী বক্সীকে জানিয়েছিলেন, কর্মাধ্যক্ষদের নাম চূড়ান্ত করার সময়ে যেন নির্মল ঘোষের নাম মনে রাখা হয়। নেত্রীর বার্তা বুঝতে অসুবিধ হয়নি সুব্রতবাবুর। সেখান থেকেই নির্মলের পূর্ত প্রাপ্তি। নির্মল মানছেন, ‘‘বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে প্রতি বছর যাই। এ বারও গিয়েছি। অনেকেই গিয়েছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। দল যে দায়িত্ব দেবে, তাই পালন করব।’’

কলকাতা থেকে ফিরে শুক্রবার মেদিনীপুরে এক বৈঠক করেছেন অজিত মাইতি, দীনেন রায়, প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তীরা। কারা কর্মাধ্যক্ষ হবেন, তা মোটের উপর ঠিক হয়েছে। দলের এক সূত্রে খবর, পুরনো চারজন না কি এ বার আর কর্মাধ্যক্ষ হচ্ছেন না। এই চারজন হলেন সূর্যকান্ত অট্ট, কাবেরী চট্টোপাধ্যায়, হামিদ কাজী এবং তপন দত্ত। নতুন যে চারজন কর্মাধ্যক্ষ হবেন তাঁরা হলেন— রমাপ্রসাদ গিরি, নেপাল সিংহ, প্রতিভা মাইতি এবং মামনি মান্ডি। দলের এক সূত্রে খবর, রমাপ্রসাদ কৃষি-সেচ কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন। নেপাল বন-ভূমি, প্রতিভা নারী-শিশুকল্যাণ, মামনি শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন। পুরনো যাঁরা থাকছেন, তাঁদের দফতর বদলানোর সম্ভাবনাই বেশি।

কেউই তাহলে নিজের পুরনো দফতর পাচ্ছেন না? সদুত্তর এড়িয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘যা হচ্ছে, যা হবে, সবই দলনেত্রীর নির্দেশে।’’c

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement