সবংয়ে নির্মল ঘোষের ভোট প্রচারে অমূল্য মাইতি। — নিজস্ব চিত্র।
দল প্রার্থী করেনি বলে গোঁসা হয়েছিল তাঁর। সবংয়ের তৃণমূল প্রার্থী নির্মল ঘোষের প্রচারেও তাঁকে সেভাবে দেখা যাচ্ছিল না। অবশেষে বরফ গলল! অভিমান ভুলে নির্মলবাবুর হয়ে প্রচারে নেমেছেন অমূল্যবাবু। দলীয় সূত্রে খবর, অনিচ্ছা সত্ত্বেও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই অমূল্যবাবু প্রচারে বেরোতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও অমূল্যবাবুর দাবি, সবংয়ের কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে তিনি দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার শুরু করেছেন। দলের এক নেতার সরস মন্তব্য, ‘‘প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারে গেলেও অমূল্যবাবু এখনও হতাশ। তাঁর মুখে হাসি নেই।’’
এ বার সবং কেন্দ্রে প্রার্থীপদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন অমূল্যবাবু। কংগ্রেসের ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত সবংয়ে মানস ভুঁইয়া ১৯৮২ সাল থেকে ভোটে লড়ছেন। ২০১১ সালে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের প্রার্থী হন মানসবাবু। এ বার তৃণমূল ভোটে আলাদা লড়ায় অমূল্যবাবুকে প্রার্থী করা নিয়ে তাঁর অনুগামীরা প্রায় নিশ্চিত ছিলেন।তবে দল ওই কেন্দ্রে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে নির্মলবাবুকে প্রার্থী করেছে। দলীয় সূত্রে খবর, নির্মলবাবু প্রার্থী হওয়ায় অমূল্যবাবুর অনুগামীদের ভোট প্রচারেও সে ভাবে দেখা যাচ্ছিল না। ব্লকে দলীয় বৈঠকে অমূল্যবাবু ও তাঁর অনুগামীরা প্রার্থী বদলের দাবি তোলেন। দলের অবস্থানও জানতে চান তাঁরা। অনেক চেষ্টা করেও চিঁড়ে ভিজছিল না। যদিও গত কয়েকদিন সবংয়ে একাধিক কর্মিসভা ও মিছিলে ‘যুযুধান’ দুই পক্ষকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে।
যদিও অস্বস্তি একটা রয়েই গিয়েছে। বৃহস্পতিবার পিংলার মালিগ্রামে ছাত্র পরিষদ কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন নির্মলবাবু। যদিও সেখানে অমূল্যবাবুকে দেখা যায়নি। অমূল্যবাবুর দাবি, “সবংয়ে বুড়ালে আমার অন্য কর্মসূচি থাকায় পিংলায় যেতে পারিনি।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অমূল্যবাবুকে ডেকে ধমক দেন। নির্মলবাবুর প্রচারে না যাওয়া নিয়ে তাঁকে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়। দলের সবংয়ের এক নেতার কথায়, “অমূল্যদা প্রচারে নামলেও ক্ষত এখনও রয়েই গিয়েছে। শীর্ষ নেতাদের ধমক রক্তক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়েছে।” যদিও অমূল্যবাবু বলছেন, “দলের কাছে প্রার্থী নিয়ে অবস্থান জানতে চেয়েছিলাম। দলের রাজ্য সভাপতি আমাকে ডেকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। আমি তাতে সন্তুষ্ট। তাই কংগ্রেসকে হারাতে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে নেমেছি।”
অমূল্যবাবু তাঁর হয়ে প্রচারে নামায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে নির্মলবাবু। নির্মলবাবু বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় যে উন্নয়ন করেছে তা মানুষ জানে। মানুষের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গেই আছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অমূল্য মাইতি সবংয়ের প্রতিষ্ঠিত নেতা। তিনি হয়তো দলের টিকিট আশা করেও না পাওয়ায় সাময়িক অভিমান করেছিলেন। এখন দলের স্বার্থে তা ভুলে অমূল্যবাবু আমার হাত ধরায়
জয় নিশ্চিত।”