বাকচায় এনআইএ। —নিজস্ব চিত্র।
ময়নার বাকচার বিজেপি নেতা বিজয় ভুঁইয়ার খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি)। মঙ্গলবার ভোর রাত থেকেই এনআইএ-র প্রায় ২০০ জন আধিকারিক ১৪টি দলে ভাগ হয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে বাকচা ও গোড়ামহল গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় অভিযানে নামেন। বিজয়কৃষ্ণ খুনে অভিযুক্ত প্রায় ১০ জন তৃণমূল নেতার বাড়িতে অভিযান চালান তাঁরা। যে সমস্ত বাড়িতে কেউ ছিল না, সেই সব বাড়ির দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তল্লাশি চালানো হয়।
এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বাকচার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা, বুদ্ধদেব মণ্ডল, স্বপন ভৌমিক, শুভেন্দু ভৌমিক, সৌমিত্র মণ্ডল পলাতক। এনআইএ-র তদন্তকারীরা তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরেই বাড়ি ‘সিল’ করার নোটিস আটকে দেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অমিতাভ ওরফে বাবু ভঞ্জ ও সুজিৎ কর-সহ চার জনের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন এনআইএ-র তদন্তকারীরা।
২০২৩ সালের ১ মে বাকচার গোড়ামহল গ্রামের বিজেপি বুথ সভাপতি বিজয় ভুঁইয়াকে বাড়ির কাছ থেকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজয়ের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি ভুঁইয়া ওই ঘটনায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা-সহ ৩৪ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাক্তন গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য মিলন ভৌমিক-সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছিল। তবে পুলিশের তদন্তে আস্থা না রেখে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে গিয়ে তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিজয়ের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি। গত এপ্রিল মাসে কলকাতা হাইকোর্ট এনআইএ-কে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়।
বাকচার বিজেপি নেতা তথা জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সিংহ বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা বিজয় ভুঁইয়াকে খুনের ঘটনার তদন্ত করছে এনআইএ। ওই খুনের ঘটনায় জড়িত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাঁচ জন পলাতক। কয়েক জনের পরিবার তদন্তে সহযোগিতা করেছে।’’ ময়নার ব্লক তৃণমূল সভাপতি সন্দীপব্রত দাসের কথায়, ‘‘এনআইএ-র তদন্তে আমাদের আস্থা রয়েছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।’’