শুধু সেলুলয়েড নয়, এ বার ইদের বাজার মাতাচ্ছে ‘বাজিরাও মস্তানি’। পর্দার নায়ক ‘বাজিরাও’ রণবীর সিংহের সঙ্গে দীপিকা পাডুকোনের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট এ বার ইদের পোশাক বাজারেও। চাহিদা রয়েছে ‘প্রেম রতন ধন পাও’ ছবির নায়িকা সোনম কপূরের চুড়িদারেরও। হাইস্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোরী-তরুণীরা তো বটেই গৃহবধূরাও মজেছেন নতুন ফ্যাশনের এই চুড়িদার-পোশাকে।
বুধবার ইদের নমাজের আগে বাজারে এখন পোশাক, গয়না, জুতো, আতর থেকে লাচ্ছা, সিমুই কেনার ভিড়। মাঝে মধ্যে প্রবল বৃষ্টি ও মেঘলা আকাশ দেখে অনেকেই বাড়ির বাইরে বেরোতে ভুরু কোঁচকালেও কেনাকাটা চলছে জোর কদমেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে তমলুক শহর, মেচেদা বাজার, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, মহিষাদল, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাকাটা চলছে। মেয়েদের বাজার মাতাচ্ছে মেয়েদের নতুন স্টাইলের ‘বাজিরাও মস্তানি’ ও ‘প্রেম রতন ধন পাও’ পোশাক।
তমলুক শহরের পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে বাজারে একটি দোকানে সোমবার সকালে মেয়েকে নিয়ে ইদের কেনাকাটা করতে এসেছিলেন মথুরি গ্রামের লীনা বেগম। বছর আটেকের মেয়ে আফরিনের জন্য স্কার্ট-টপ পছন্দ হয়েছে। আর নিজের জন্য? একগাল হেসে লীনা বেগমের উত্তর, ‘‘শাড়ি প্রথম পছন্দ। তবে এবার একটা বাজিরাও মস্তানি সালওয়ারও কেনার ইচ্ছে রয়েছে।’’ একই সুরে স্কুল পড়ুয়া কিশোরী ফারহা খাতুন বলে, ‘‘বাজিরাও চুড়িদার ছাড়া অন্য কিছু কেনার কথা ভাবছি না।’’ বস্ত্র ব্যবসায়ী অজয় দে জানান, এ বার ইদের বাজার ধরে রেখেছে এই দুই সালওয়ারই। তবে বাজিরাও চুড়িদারের চাহিদা সবথেকে বেশি। ছোটদের এই পোশাকের দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা আর বড়দের ১৫০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত। একই ছবি তমলুক শহরের পুরনো পঞ্জাব ব্যাঙ্কের মোড়ে। স্থানীয় পোশাক ব্যবসায়ী আসরফ মল্লিক ও সঞ্জয় ঘড়া জানান, নেটের উপর রঙিন কারুকাজ করা থাকে বাজিরাও চুড়িদারে। আর ব্রাসো নেটের উপর সুক্ষ্ম পাথরের কারুকাজ করা রয়েছে প্রেম রতন ধন পাও চুড়িদারে। প্রেম রতন ধন পাও চুড়িদারের দাম ১৭০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।
আর ছেলেদের পোশাক বাজারে রমরমা জিনস-শার্টের। পাঞ্জাবিরও চাহিদা ভালই। তমলুক শহরে পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড পাড়ায় দর্জি দোকান রয়েছে বক্তিয়ার খানের। তাঁর কথায়, ‘‘বয়স্ক আর কম বয়সী সকলেরই প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি। অনেকে রেডিমেড পাঞ্জাবি কেনেন আর অনেকে পছন্দমতো পাঞ্জাবি তৈরি করতে দেন। পাঞ্জাবি কিনতে এসেছিলেন ধলহরা গ্রামের যুবক তসলিম আরিফ। কাজের সূত্রে কলকাতায় থাকা তসলিম এসেছেন ইদের ছুটিতে। তসলিমের কথায়, ‘‘সারা বছর তো প্যান্ট-শার্ট পড়েই কাজ করতে হয় আনন্দ অনুষ্ঠানে সাজটা একটু আলাদা না হলে হয়না। তাই প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবিই।’’