প্রতীকী ছবি।
আবর্জনা সমস্যা ও পরিবেশ দূষণ রুখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগিয়ে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে জৈবসার তৈরির প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি পঞ্চায়েত ও জেলাপরিষদের উদ্যোগে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ নামে এধরনের প্রকল্প গড়া হয়েছে। মূলত এলাকার বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের ফেলে দেওয়া বিভিন্ন আবর্জনা জৈবসার তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে। এতে এক দিকে যেমন জঞ্জাল সমস্যা মিটছে। তেমনই অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব জৈবসার চাষে ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষণ কমছে।
কিন্তু জেলার ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিকাংশতেই এধরনের বর্জ্য ব্যবস্থপনা না থাকায় বিভিন্ন বাজার ও সংলগ্ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় জঞ্জাল সমস্যা তীব্র হচ্ছে বলে অভিযোগ। জেলাপরিষদ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে জেলার প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির পাশাপাশি বাসিন্দাদের পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে জোর দেওয়া হয়েছে। শৌচাগার তৈরিতে সাফল্যের মাপকাঠিতে ‘নির্মল জেলা’ হিসেবে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি পেয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। যদিও জেলার বিভিন্ন এলাকায় আবর্জনা সমস্যার জেরে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যপূরণ হয়নি বলে অভিযোগ। বিভিন্ন গ্রামীণ ও বাজার এলাকায় রাস্তার ধারে ও নিকাশিনালায় জঞ্জাল জমে পরিবেশ দূষণ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে জেলার বিভিন্ন স্থানে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ১৭টি ও জেলা পরিষদের উদ্যোগে তৈরি ১২টি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র চালু রয়েছে। এইসব প্রকল্প তৈরি ও পরিচালনার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিতে হয়েছে। যদিও জেলায় চাহিদার তুলনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সংখ্যা খুবই কম রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় বর্জ্য গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও পরিকল্পনা তৈরির জন্য জেলাপরিষদের অফিসে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সেল’ গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ‘‘প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ সহ গ্রামীণ এলাকায় আবর্জনা সমস্যা দূর করতে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গড়ায় জোর দেওয়া হয়েছে। এ জন্য পঞ্চায়েতগুলিকে পরামর্শ-সহ কারিগরি সহায়তা দিতে জেলাপরিষদের অফিসে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সেল’ গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। দু’জন কনসালট্যান্ট-নিয়ে ওই সেল চালু করা হবে।’’
জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আরও জানান, জেলার কয়েকটি পঞ্চায়েতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু হলেও সেগুলি তৈরি ও পরিচালনার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে সাহায্য নিতে হয়েছে। কিন্তু এখনও জেলার অধিকাংশ এলাকায় এমন প্রকল্প নেই। তাই যে সব এলাকায় আবর্জনা সমস্যা রয়েছে সেখানে পঞ্চায়েতের উদ্যোগেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গড়ায় জোর দেওয়া হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিতেই জেলাপরিষদ অফিসে পৃথক সেল চালু করা হবে।