সমস্যা বাড়িয়েছে ইয়াসের জলোচ্ছ্বাস
fishing

নাব্যতা কমে সঙ্কটে মৎস্যবন্দর

বন্দরে ঢোকার মুখে দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে বহু ট্রলার। দুর্ঘটনার জেরে মারাও গিয়েছেন কয়েকজন মৎস্যজীবী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শঙ্করপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৬:৩৭
Share:

শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরে ট্রলারের সারি। নিজস্ব চিত্র।

সমস্যা আগে থেকেই ছিল। গত মাসে ইয়াসের পর সেই সমস্যা এতটাই তীব্র হয়েছে যে অচল হতে বসেছে শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর।

Advertisement

ইয়াসের কারণে প্রচুর পলি জমে নাব্যতা কমে গিয়েছে শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের। মাছ ধরার মরসুমের শুরুতে এ বার অন্য বছরের তুলনায় ট্রলারের সংখ্যা বেশ কম। অনেক ট্রলার ওড়িশার ধামরা অথবা কাঁথির পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দরে চলে যাচ্ছে বলে মৎস্যজীবীদের অভিযোগ। অবিলম্বে মৎস্যবন্দরে ঢোকার মুখে জমে থাকা পলি না তোলা হলে বন্দরের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় মৎস্যজীবী ও ট্রলার মালিক সংগঠন।

ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল উপকূলবর্তী এলাকা। যার প্রভাব পড়ে সমুদ্র উপকূলবর্তী মৎস্য বন্দরগুলিতে। মৎস্য বন্দরগুলির মধ্যে সবচেয়ে পুরনো শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরে ঢোকার মুখে গভীর খাল রয়েছে। ওই খাল ধরে বন্দর থেকে ট্রলারগুলি সমুদ্র রওনা দেয়। কয়েক বছর আগে বন্দরে ড্রেজিং করা হয়। স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ সে সময় সঠিকভাবে ড্রেজিং করা হয়নি। ফলে ওই জায়গায় ফের সমুদ্রের বালি এবং পলি জমে চরা পড়েছে। বন্দরে ঢোকার মুখে দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে বহু ট্রলার। দুর্ঘটনার জেরে মারাও গিয়েছেন কয়েকজন মৎস্যজীবী। ইয়াসের জলোচ্ছাসে প্রভাবে সেই পলি এবং বালি আরও বেশি করে জমে যাওয়ায় বেশ কিছু ট্রলার ইতিমধ্যেই মৎস্যবন্দরে ঢুকতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে। মৎস্যজীবীরা মৎস্য বন্দরগুলির ড্রেজিং-সহ পরিকাঠামোর উন্নতির দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসন অবিলম্বে পদক্ষেপ না করলে তাঁরা আন্দোলনে নামার পাশাপাশি মাছ ধরা বন্ধেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এতে সামুদ্রিক মাছের বাজারে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। নতুন করে জেটি তৈরি ও সম্প্রসারণ এবং মৎস্যজীবীদের জন্য প্যাকিং রুম সহ মেরামতির ব্যবস্থা, শৌচালয় ও পানীয় জলের ব্যবস্থা-সহ নানা দাবি জানানো হয়ে‌ছে।

Advertisement

শঙ্করপুর মৎস্যবন্দরে দীর্ঘ দিনের পুরনো দুটি পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে। দুটি বরফ কলও অনিয়মিত। এতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ট্রলার মালিকদের। এ ব্যাপারে শঙ্করপুর ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক স্বদেশ নায়ক বলেন, ‘‘এই সব সমস্যার সমাধান-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে নামতে চলেছে মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী এলাকার মৎস্যজীবীরা।’’

যদিও মৎস্যজীবীদের এই সমস্ত দাবিকে গুরত্ব দিতে নারাজ মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। তাঁর দাবি, ‘‘ইতিমধ্যেই পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। পানীয় জল থেকে বিদ্যুতের সমস্যাও তাড়াতাড়ি মিটে যাবে।’’ শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের বিশেষ আধিকারিক বিশ্বরূপ বসু বলেন, ‘‘পর্যায়ক্রমে বরফ কল থেকে শুরু করে অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ ধীরে ধীরে চলছে। তবে সমুদ্র এখন উত্তাল থাকায় ড্রেজিংয়ের কাজ করা যাচ্ছে না। নভেম্বর মাসে যাতে ড্রেজিং করা যায় তার জন্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement